চুয়াডাঙ্গা ১০:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে চাষিদের সাফলতা

শ্রাবণ মাসের শুরুতে এসে কৃষি নির্ভর মেহেরপুরের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বাঁধাকপি। অসময়ে চাষ করে লাভবান হওয়াই জেলার কৃষদের কাছে এটি একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। আর বতর্মানে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যাবহারে উৎপাদনও বেড়েছে। অল্প খরচ আর স্বল্প সময়ে ভালো ফলন ও অধিক মুনাফা পাওয়ায় অনেক চাষীই ঝুঁকছেন বাঁধাকপি চাষে।

 

 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুরের তিনটি উপজেলায় প্রায় দুইশ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ একর বেশি। অথচ বছর চারেক আগে এ গ্রীষ্মকালিন বাঁধাকপি পরীক্ষামুলক চাষ শুরু হয়েছিল জেলায়। আগামীতে আরো বাঁধাকপি চাষ বৃদ্ধি পাবে বলেও আসা করছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক কৃষির ব্যাবহারসহ উৎপাদিত ফসল বাণিজ্যিকি করন করতে কৃষদের সার্বিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে।

 

গাংনী উপজেলার বালিয়াঘাট গ্রামের গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষি ওমর ফারুক জানান, কৃষকদের কিছুদিন আগেও কপি চাষ করে লোকশানে পড়তে হতো। অথচ বতর্মানে মাঠের অনেক ক্ষেতে কপি চাষ হচ্ছে। কোন চাষি যদি ভেবে চিন্তে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে সঠিকভাবে পরিচর্যা করে ফসল আবাদ করেন তাহলে অনেক মুনাফা পাওয়া সম্ভব। তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছেন এবং উৎপাদন খরচ বাদে দেড় লক্ষ টাকা লাভ করেছেন। আগামীতে আরো এক বিঘা জমিতে এটি চাষ করবেন বলে জানান।

 

একই এলাকার চাষি সাইফুল ইসলাম জানান, বাঁধাকপি চাষে যেমন লাভবান হওয়া যায় ঠিক এ চাষে একটু খরচ বেশি। তবে বাজারে এর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় লাভবান হওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কপি চাষ করতে বতর্মানে ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর একপি বড় হওয়ার আগেই জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে ৯০ থেকে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আর স্থানীয়ভাবে খুচরা বিক্রি করতে পারলে তা থেকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি করা সম্ভব।

 

আরেক চাষি কামাল হোসেন জানান, গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপির চাষ তিনি প্রথম করেছেন। দেড় বিঘা বাঁধাকপির ক্ষেতে সাথি ফসল হিসেবে কলা গাছ লাগানো হয়েছে। কলা গাছ বড় হওয়ার আগেই বাঁধাকপি ওঠে যাবে। বাঁধাকপির ক্ষেত ঢাকার ব্যবসায়িরা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকায় কিনেছেন।

 

ঢাকার ব্যবসায়ী ওসমান জানান, এ এলাকায় প্রায় পঞ্চাশ বিঘা বাঁধাকপি কিনেছেন তারা। গ্রীষ্মকালে এ অঞ্চলে বাঁধাকপির চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। যার ফলে কৃষকের পাশাপাশি ব্যবসায়িরাও বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। প্রতি বিঘা বাঁধাকপি প্রকার ভেদে আমরা ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পযর্ন্ত কেনা হচ্ছে। বাঁধাকপি আমরা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্রি করা হয় বলেও জানান এই ব্যবসায়ি।

 

মেহেরপুর জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, মেহেরপুরের আবহওয়া কৃষির জন্য বেশ উপযোগী। জেলায় দুইশ একর জমিতে বাঁধাকপির চাষ হয়েছে। যা অতিতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও আসা করছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষদের সার্বিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

ভোলায় কৃষকদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

গাংনীতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষে চাষিদের সাফলতা

প্রকাশ : ০৬:৩০:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩

শ্রাবণ মাসের শুরুতে এসে কৃষি নির্ভর মেহেরপুরের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বাঁধাকপি। অসময়ে চাষ করে লাভবান হওয়াই জেলার কৃষদের কাছে এটি একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। আর বতর্মানে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যাবহারে উৎপাদনও বেড়েছে। অল্প খরচ আর স্বল্প সময়ে ভালো ফলন ও অধিক মুনাফা পাওয়ায় অনেক চাষীই ঝুঁকছেন বাঁধাকপি চাষে।

 

 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুরের তিনটি উপজেলায় প্রায় দুইশ একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ একর বেশি। অথচ বছর চারেক আগে এ গ্রীষ্মকালিন বাঁধাকপি পরীক্ষামুলক চাষ শুরু হয়েছিল জেলায়। আগামীতে আরো বাঁধাকপি চাষ বৃদ্ধি পাবে বলেও আসা করছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক কৃষির ব্যাবহারসহ উৎপাদিত ফসল বাণিজ্যিকি করন করতে কৃষদের সার্বিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে।

 

গাংনী উপজেলার বালিয়াঘাট গ্রামের গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষি ওমর ফারুক জানান, কৃষকদের কিছুদিন আগেও কপি চাষ করে লোকশানে পড়তে হতো। অথচ বতর্মানে মাঠের অনেক ক্ষেতে কপি চাষ হচ্ছে। কোন চাষি যদি ভেবে চিন্তে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে সঠিকভাবে পরিচর্যা করে ফসল আবাদ করেন তাহলে অনেক মুনাফা পাওয়া সম্ভব। তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছেন এবং উৎপাদন খরচ বাদে দেড় লক্ষ টাকা লাভ করেছেন। আগামীতে আরো এক বিঘা জমিতে এটি চাষ করবেন বলে জানান।

 

একই এলাকার চাষি সাইফুল ইসলাম জানান, বাঁধাকপি চাষে যেমন লাভবান হওয়া যায় ঠিক এ চাষে একটু খরচ বেশি। তবে বাজারে এর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় লাভবান হওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কপি চাষ করতে বতর্মানে ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর একপি বড় হওয়ার আগেই জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে ৯০ থেকে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আর স্থানীয়ভাবে খুচরা বিক্রি করতে পারলে তা থেকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি করা সম্ভব।

 

আরেক চাষি কামাল হোসেন জানান, গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপির চাষ তিনি প্রথম করেছেন। দেড় বিঘা বাঁধাকপির ক্ষেতে সাথি ফসল হিসেবে কলা গাছ লাগানো হয়েছে। কলা গাছ বড় হওয়ার আগেই বাঁধাকপি ওঠে যাবে। বাঁধাকপির ক্ষেত ঢাকার ব্যবসায়িরা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকায় কিনেছেন।

 

ঢাকার ব্যবসায়ী ওসমান জানান, এ এলাকায় প্রায় পঞ্চাশ বিঘা বাঁধাকপি কিনেছেন তারা। গ্রীষ্মকালে এ অঞ্চলে বাঁধাকপির চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। যার ফলে কৃষকের পাশাপাশি ব্যবসায়িরাও বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। প্রতি বিঘা বাঁধাকপি প্রকার ভেদে আমরা ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পযর্ন্ত কেনা হচ্ছে। বাঁধাকপি আমরা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্রি করা হয় বলেও জানান এই ব্যবসায়ি।

 

মেহেরপুর জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান, মেহেরপুরের আবহওয়া কৃষির জন্য বেশ উপযোগী। জেলায় দুইশ একর জমিতে বাঁধাকপির চাষ হয়েছে। যা অতিতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। আগামীতে আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও আসা করছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষদের সার্বিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে।