মহানগরীতে ৩০ কিলোমিটারের অতিরিক্ত গতিতে যাবে না, ঈদের সময় মহাসড়কে ১০ দিন চলাচল বন্ধসহ মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা–২০২৩-এর খসড়া করা হয়েছে। এটা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।এরই ধারাবাহিকতায় আগামী
বুধবার (১ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা–সংলগ্ন রাস্তার ফুটপাতে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন মোটরসাইকেলের চালকেরা।
মানববন্ধন কর্মসূচির অনুমতি চেয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করা হয়। এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের সব মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিটি হবে শান্তিপূর্ণ। চিঠিতে সই করেছেন তিন মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী—শাখাওয়াত হোসেন, এ ক ম ইকবাল মাহমুদ ও অনন্ত জান্নাত।
আয়োজকদের একজন শাখাওয়াত হোসেন বলেন, তারা পুলিশের অনুমতি পেয়েছেন। কোনো সংগঠনের ব্যানারে নয়, সাধারণ চালক হিসেবে এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল চালকদের অনেক ক্লাব রয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা আশা করছেন, এক হাজার ব্যবহারকারী মোটরসাইকেল নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। শান্তিপূর্ণভাবে ও শৃঙ্খলার সঙ্গে কর্মসূচিটি পালন করতে চান তারা।
প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে সম্পর্কে শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মোটরসাইকেল একটি মোটরযান। এটা মাত্র ৩০ কিলোমিটার গতিতে চালানো সম্ভব নয়। মহাসড়কে পেছনে আরোহী নিতে বাধা দেওয়াও ঠিক নয়। কেউ যদি নিজের ভাইকে নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে যেতে চান, তাহলে বাধা কেন দেওয়া হবে। সাভারের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যেতে হলে মহাসড়ক পার হতে হয়। মহাসড়কে ১২৫ সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতা) মোটরসাইকেল যদি উঠতে না পারে, তাহলে অনেক শহরের ভেতরেও চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, শহরের ভেতর দিয়েই মহাসড়ক গেছে।
প্রসঙ্গত, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত নয় সদস্যের কমিটি মোটরসাইকেল চলাচলের খসড়া একটি নীতিমালা করেছে।
খসড়া নীতিমালায় তিনটি উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে—১. মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো। ২. মোটরসাইকেলের নিরাপদ ব্যবহার ও অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ তৈরি। ৩. মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দূরের পথে মহাসড়কসহ সর্বত্র মোটরসাইকেলের চলাচল দেখা যায়। বিশেষ করে উৎসবের সময় মোটরসাইকেলের ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ঘটছে। এ জন্য মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
নীতিমালায় ঈদের সময় মহাসড়কে ১০ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু বিষয় যুক্ত করেছে কমিটি।
কমিটিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
সৌজন্যেঃ ইত্তেফাক