অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি চালু করা সম্ভব হয়নি। গেল চার মাস আগে বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় তেল পাম্প বাকিতে তেল দিচ্ছে না। ফলে অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে রোগি সাধারণের ভোগান্তি বেড়েছে চরমে। সাধারণ রোগিদের বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে গেলে মোটা টাকা গুণতে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, তেলের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে আবারো চালু হবে সেবাটি।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার প্রায় সাত লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দেয় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ইনডোর ও আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ জন চিকিৎসা নেয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রায় প্রতিদিনই কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও ঢাকায় রোগী পরিবহন করতে হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু তেল বরাদ্দ অভাবে অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ হয়ে যায়।
গেল শনিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে গাছের নীচে। কর্মহীণ সময় কাটাচ্ছেন চালক আব্দুল মালেক। এসময় কাজিপুর থেকে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত রোগিকে কুষ্টিয়ায় নেয়ার পরামর্শ দেন জরুরূ বিভাগের চিকিৎসক। কিন্তু সরকারী অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাইরে থেকে চড়া ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স নিতে হয়। একই কথা জানিয়েছেন শিশুলতলা গ্রামের বাদল মাস্টার। তিনি জানান, তার পিতা জালালুদ্দীন দুর্ঘটনার পা ভেঙ্গে যায়। রাতে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় হুদা ডায়াগনস্টিকের অ্যাম্বুলেন্স নিতে হয়েছে। এখানে তিনগুণ ভাড়া দিতে হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্সটির চালক আব্দুল মালেক বলেন, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহনের ভাড়ার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়। বিপরীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি তেল ক্রয় বাবদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ায় গত ডিসেম্বর মাস থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি বন্ধ। স্থানীয়ভাবে অ্যাম্বুলেন্সের আয় দিয়ে জ¦ালানী কেনার অনুমতি না থাকায় সমস্যাটি মাঝে মধ্যেই দেখা দেয়। তেল বাবদ বাকি রয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৯১ টাকা।
মেহেরপুর ফিলিং স্টেশনের মালিক আশাদুল ইসলাম আশা জানান, বর্তমানে তেলের মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সকলেই নানা সংকটে ভুগছেন। গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নেয়া তেল বাবদ বাকি রয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজার ৯১ টাকা। বার বার টাকা চেয়ে চিঠি দেয়া হলেও দেনা পরিশোধ না করায় তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। যা বাকি পড়েছে তার অর্ধেক টাকা পরিশোধ করলেও তেল সরবরাহ করা হতো। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ সেটি করছে না।
অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি বন্ধের ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রাণী জানান, তেলপাম্প কোন তেল সরবরাহ করছে না। বেশ কয়েকবার অনুরোধ করার পরও তারা কথা রাখেনি। এদিকে বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেয়া ছাড়াও মোবাইল ফোনে কথা বলা হয়েছে কিন্তু অদ্যাবদি বরাদ্দ মেলেনি।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের আয় হয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ২৫০ টাকা। এ টাকা খরচ করার অধিকার না থাকায় তা সম্ভব হয় না। বরাদ্দ পাওয়া গেলে অ্যাম্বুলেন্স সেবাটি চালু করা হবে।