আভাস নিউজ ডেস্কঃ 
নিজের ৭৮তম জন্মদিনে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
১৯৪৮ সালের আজকের এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের জন্ম। তার বাবার নাম মির্জা রুহুল আমিন ও মাতা মির্জা ফাতেমা আমিন। মির্জা রুহুল আমিন ছিলেন একজন আইনজীবী। মির্জা রুহুল আমিন ঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি থেকে মির্জা ফখরুলের জাতীয় রাজনীতিতে হাতেখড়ি আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দল ন্যাপে। সেখান থেকে শিক্ষকতা, সরকারি চাকরি এবং পরে তার বিএনপিতে যোগদান। এখন তিনি বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে এসেছেন। প্রথমে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও পরে দলটির মহাসচিব হিসেবে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে দায়িত্বপালন করছেন তিনি।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আগে মির্জা ফখরুল জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন।
১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিব ছিলেন মির্জা ফখরুল। ১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি, পরে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব পদে উঠে আসেন তিনি।
২০১১ সাল থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন মির্জা ফখরুল। এরপর ২০১৬ সালে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলটির মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি। সেই থেকে বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের শাসনের সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৮ সাল থেকে প্রায় দুই বছর কারাগারে ছিলেন। এরপর অসুস্থতার কারণে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে লন্ডন যান। এখনো লন্ডন থেকে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। তবে দেশে থেকে বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ও এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৯-এর গণ–অভ্যুত্থানের সময়ে তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন ফখরুল। ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন তিনি।
১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং শুরু করেন তৃণমূল থেকে। তিনি প্রথমে ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে জিতে হন চেয়ারম্যান।
ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফখরুল। ২০০১-০৬ মেয়াদের বিএনপি সরকারে কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি।
২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি শপথ না নেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপির জিএম সিরাজ সংসদে যান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম। দুই মেয়ে নিয়ে তাঁদের সংসার। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন। মির্জা শামারুহ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে ঢাকায় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
