চুয়াডাঙ্গা ১২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা শক্তিশালী, সবাইকে পরাজিত করব: জেলেনস্কি

দিন-সপ্তাহ-মাসের পর মাস পেরিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ গড়িয়েছে দ্বিতীয় বছরে। দীর্ঘ এক বছর ধরে যুদ্ধ চলার পরও চলমান এই সংঘাতের এখনও কোনও শেষ দেখা যাচ্ছে না। আর এই মধ্যেই ইউক্রেনের লড়াকু প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘সবাইকে পরাজিত করার’ হুংকার দিয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়া এবং তার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সমর্থনকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত বিশ্ব নেতারা। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার একটি ভিডিওবার্তা দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেছেন: ‘…আমরা শক্তিশালী। আমরা যেকোনও কিছুর জন্য প্রস্তুত। আমরা সবাইকে পরাজিত করব।’

এক বছর আগে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর কথা স্মরণ করে জেলেনস্কি বলেন, ‘এভাবেই ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখটি শুরু হয়েছিল। সেটি আমাদের জীবনের দীর্ঘতম দিন। আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন দিন। আমরা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি এবং তারপর থেকে ঘুমাইনি।’

২০২২ সালকে সহনশীলতা, সাহস, ব্যথা এবং ঐক্যের বছর হিসাবে বর্ণনা করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘এর প্রধান উপসংহার হলো- আমরা বেঁচে গেছি। আমরা পরাজিত হইনি। এবং আমরা এই বছর জয়ের জন্য সবকিছু করব!’

বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে যুদ্ধ চলছে। আর ঠিক এই সময়টিতেই সারা বিশ্বের মিত্ররা রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বার্ষিকীতে ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন তুলে ধরেছে। ফ্রান্স ইউক্রেনীয় পতাকার নীল এবং হলুদ রঙে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আলো জ্বালিয়েছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের পতাকায় জড়িয়ে লন্ডনে বহু মানুষ একটি ব্যানার সামনে তুলে ধরে। সেখানে লেখা ছিল: ‘যদি আপনি স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ান তবে ইউক্রেনের পক্ষে দাঁড়ান’। প্যারিসের মেয়র অ্যান হিডালগো এক বক্তৃতায় বলেছেন, ‘এই যুদ্ধের পরে একটি জীবন পাওয়া যাবে, কারণ (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) ইউক্রেনই জিতবে।’

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধ বন্ধ করার দাবিতে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদ মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। ১৪১ টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে প্রথম আক্রমণ চালিয়েছিল রাশিয়া। তার ঠিক এক বছর পর জাতিসংঘে এই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হলো। ইউরোপ এবং আমেরিকার অধিকাংশ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

প্রস্তাবের বিপক্ষে থেকেছে রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, মালি, ইরিত্রিয়া এবং নিকারাগুয়া। ভোটদান থেকে বিরত থাকা ৩২টি দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ। এছাড়া মধ্য এশিয়ার বেশ কিছু দেশও ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

জাতিসংঘে রাশিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জাতিসংঘের এই পদক্ষেপকে ‘অকেজো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার তৎপরতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। রুশ আগ্রাসনের প্রথম বার্ষিকী ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাশিয়ার সীমান্তে উত্তরাঞ্চলের অন্তত ২৫টি শহর ও গ্রাম গোলাবর্ষণের কবলে পড়েছে।

রয়টার্স অবশ্য যুদ্ধক্ষেত্রের এই প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। রাশিয়া এখন ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

বঙ্গোপসাগরে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে হাঙ্গর : সুরক্ষা শুধু কাগজে-কলমে

avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

আমরা শক্তিশালী, সবাইকে পরাজিত করব: জেলেনস্কি

প্রকাশ : ০৪:০২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

দিন-সপ্তাহ-মাসের পর মাস পেরিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ গড়িয়েছে দ্বিতীয় বছরে। দীর্ঘ এক বছর ধরে যুদ্ধ চলার পরও চলমান এই সংঘাতের এখনও কোনও শেষ দেখা যাচ্ছে না। আর এই মধ্যেই ইউক্রেনের লড়াকু প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ‘সবাইকে পরাজিত করার’ হুংকার দিয়েছেন।

অন্যদিকে রাশিয়া এবং তার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সমর্থনকারী দেশগুলোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত বিশ্ব নেতারা। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার একটি ভিডিওবার্তা দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেছেন: ‘…আমরা শক্তিশালী। আমরা যেকোনও কিছুর জন্য প্রস্তুত। আমরা সবাইকে পরাজিত করব।’

এক বছর আগে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর কথা স্মরণ করে জেলেনস্কি বলেন, ‘এভাবেই ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখটি শুরু হয়েছিল। সেটি আমাদের জীবনের দীর্ঘতম দিন। আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন দিন। আমরা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি এবং তারপর থেকে ঘুমাইনি।’

২০২২ সালকে সহনশীলতা, সাহস, ব্যথা এবং ঐক্যের বছর হিসাবে বর্ণনা করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘এর প্রধান উপসংহার হলো- আমরা বেঁচে গেছি। আমরা পরাজিত হইনি। এবং আমরা এই বছর জয়ের জন্য সবকিছু করব!’

বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে যুদ্ধ চলছে। আর ঠিক এই সময়টিতেই সারা বিশ্বের মিত্ররা রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম বার্ষিকীতে ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন তুলে ধরেছে। ফ্রান্স ইউক্রেনীয় পতাকার নীল এবং হলুদ রঙে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আলো জ্বালিয়েছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের পতাকায় জড়িয়ে লন্ডনে বহু মানুষ একটি ব্যানার সামনে তুলে ধরে। সেখানে লেখা ছিল: ‘যদি আপনি স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ান তবে ইউক্রেনের পক্ষে দাঁড়ান’। প্যারিসের মেয়র অ্যান হিডালগো এক বক্তৃতায় বলেছেন, ‘এই যুদ্ধের পরে একটি জীবন পাওয়া যাবে, কারণ (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) ইউক্রেনই জিতবে।’

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধ বন্ধ করার দাবিতে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।

ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদ মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। ১৪১ টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে প্রথম আক্রমণ চালিয়েছিল রাশিয়া। তার ঠিক এক বছর পর জাতিসংঘে এই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হলো। ইউরোপ এবং আমেরিকার অধিকাংশ দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

প্রস্তাবের বিপক্ষে থেকেছে রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, মালি, ইরিত্রিয়া এবং নিকারাগুয়া। ভোটদান থেকে বিরত থাকা ৩২টি দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ। এছাড়া মধ্য এশিয়ার বেশ কিছু দেশও ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

জাতিসংঘে রাশিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জাতিসংঘের এই পদক্ষেপকে ‘অকেজো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী পূর্ব ও দক্ষিণে রাশিয়ার তৎপরতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। রুশ আগ্রাসনের প্রথম বার্ষিকী ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাশিয়ার সীমান্তে উত্তরাঞ্চলের অন্তত ২৫টি শহর ও গ্রাম গোলাবর্ষণের কবলে পড়েছে।

রয়টার্স অবশ্য যুদ্ধক্ষেত্রের এই প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। রাশিয়া এখন ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।