চুয়াডাঙ্গা ১২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় প্রচন্ড দাবদাহে যখন তখন লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তিতে মানুষ

কি ওয়াক্ত-তারাবী নামাজ, কি ইফতার, অস্বাভাবিক তাপদাহের মধ্যেই মোংলায় চলছে যখন তখন লোডশেডিং। একদিকে অসহ্য গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন, তারপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পরিস্থিতি দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দিনে চার থেকে পাঁচ বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করছে এখানে।

 

রুটিন মেনে লোডশেডিংয়ের নিয়ম আর মানা হচ্ছেনা। এরমধ্যে আবার শহরের বিভিন্নস্থানে রাস্তায় মাকড়োসার জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে বিদ্যুৎতের তার। নতুন এই সৃষ্ট সমস্যায় চলাচলের অসুবিধাসহ ঝুঁকি আর আতংক দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে রাস্তায় ফেলা তার ছিটানোর বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, উন্নয়ন কাজ চলছে তাই সাময়িক এ ভোগান্তি।

 

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র শেখ আব্দুল হাই সড়ক, বিএলএস রোড, এনজে ষ্টোর মোড় ও চৌধুরী মোড়ের রাস্তার উপর তার বিছানো দেখে হঠাৎ বিভ্রান্তিতে পড়ে যান সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎতের তার দেখে রাস্তায় আর পা ফেলতে সাহস পাচ্ছিলেন না তারা। রিজেকশন গলির ব্যবসায়ী মোঃ শামসুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাজার করতে যাচ্ছিলাম, এরমধ্যে রাস্তার উপর জালের মত বিদ্যুৎতের তার বিছানো দেখে ভয় পেয়েছি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হই কিনা তাই। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের এমন কান্ডে তাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বললেন এই ব্যবসায়ী। এভাবে অনেক পথচারীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, রাতের বেলায় রাস্তা ফাঁকা হলে এসব কাজ করা যেত। তা না করে বিদ্যুৎ বিভাগ তাদেরকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছেন।

 

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে অত্যাধিক গরমের কারণে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ঘটছে ব্যাঘাত। নবজাতক ও অসুস্থ্য রোগীরা লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিদ্যুতের অভাবে মোংলায় পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।

 

পৌর শহরের ছাড়াবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, গরমের মধ্যেও দিনে চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ইফতার কিংবা তারাবির নামাজের সময়ও বিদ্যুৎ থাকছেনা। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতার ফলে রমজান মাসে শান্তি মত একটু ইবাদাত করতে পারছিনা, কষ্ট হচ্ছে।

 

কলেজ মোড়ের বাসিন্দা গৃহিনী লিপি আক্তার বলেন, লোডশেডিংয়ের ফলে অসহ্য অবস্থা পার করছি। একে তো অনেক গরম, তার ওপর এতবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, যেটা বলার মত না’। রাতে ১ টা দেড়াটায়ও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গরমে ঘুমাতে না পেরে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

ব্যবসায়ীরা রয়েছেন নাকাল পরিস্থিতিতে। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। ব্যবসায়ী তরুন চন্দ, দীনেশ হালদার ও ফরহাদ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে বেচা-কেনাও।

 

এ বিষয়ে পিডিবির মোংলার আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, মোংলায় তুলনামূলক লোডশেডিং অনেক কম। তবে রমজান মাসের শুরু থেকেই একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, মোংলা শহরের মেইন লাইনের তার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে গেছে। এ কারণে তারের ভেতরে তামা পুড়ে বিদ্যুৎ লোড নিতে পারতোনা। তাই এই তার পরিবর্তনের জন্য গত দুই বছর আগে হাতে নেওয়া প্রকল্পের কাজ চলছে। এলাকাভিত্তিক এই উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে, তাই সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

প্রসঙ্গঃ
জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রদল নেতাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেফতার

avashnews
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

মোংলায় প্রচন্ড দাবদাহে যখন তখন লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তিতে মানুষ

প্রকাশ : ০৫:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

কি ওয়াক্ত-তারাবী নামাজ, কি ইফতার, অস্বাভাবিক তাপদাহের মধ্যেই মোংলায় চলছে যখন তখন লোডশেডিং। একদিকে অসহ্য গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন, তারপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পরিস্থিতি দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দিনে চার থেকে পাঁচ বার বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করছে এখানে।

 

রুটিন মেনে লোডশেডিংয়ের নিয়ম আর মানা হচ্ছেনা। এরমধ্যে আবার শহরের বিভিন্নস্থানে রাস্তায় মাকড়োসার জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে বিদ্যুৎতের তার। নতুন এই সৃষ্ট সমস্যায় চলাচলের অসুবিধাসহ ঝুঁকি আর আতংক দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে রাস্তায় ফেলা তার ছিটানোর বিষয় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, উন্নয়ন কাজ চলছে তাই সাময়িক এ ভোগান্তি।

 

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র শেখ আব্দুল হাই সড়ক, বিএলএস রোড, এনজে ষ্টোর মোড় ও চৌধুরী মোড়ের রাস্তার উপর তার বিছানো দেখে হঠাৎ বিভ্রান্তিতে পড়ে যান সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎতের তার দেখে রাস্তায় আর পা ফেলতে সাহস পাচ্ছিলেন না তারা। রিজেকশন গলির ব্যবসায়ী মোঃ শামসুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাজার করতে যাচ্ছিলাম, এরমধ্যে রাস্তার উপর জালের মত বিদ্যুৎতের তার বিছানো দেখে ভয় পেয়েছি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হই কিনা তাই। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের এমন কান্ডে তাদের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বললেন এই ব্যবসায়ী। এভাবে অনেক পথচারীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, রাতের বেলায় রাস্তা ফাঁকা হলে এসব কাজ করা যেত। তা না করে বিদ্যুৎ বিভাগ তাদেরকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছেন।

 

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে অত্যাধিক গরমের কারণে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ঘটছে ব্যাঘাত। নবজাতক ও অসুস্থ্য রোগীরা লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়া বিদ্যুতের অভাবে মোংলায় পানির সংকটও দেখা দিয়েছে।

 

পৌর শহরের ছাড়াবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, গরমের মধ্যেও দিনে চার-পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ইফতার কিংবা তারাবির নামাজের সময়ও বিদ্যুৎ থাকছেনা। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের চরম উদাসীনতার ফলে রমজান মাসে শান্তি মত একটু ইবাদাত করতে পারছিনা, কষ্ট হচ্ছে।

 

কলেজ মোড়ের বাসিন্দা গৃহিনী লিপি আক্তার বলেন, লোডশেডিংয়ের ফলে অসহ্য অবস্থা পার করছি। একে তো অনেক গরম, তার ওপর এতবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, যেটা বলার মত না’। রাতে ১ টা দেড়াটায়ও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গরমে ঘুমাতে না পেরে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

ব্যবসায়ীরা রয়েছেন নাকাল পরিস্থিতিতে। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা সংকটে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। ব্যবসায়ী তরুন চন্দ, দীনেশ হালদার ও ফরহাদ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্রেতারাও আসছেন না। ফলে কমে গেছে বেচা-কেনাও।

 

এ বিষয়ে পিডিবির মোংলার আবাসিক প্রকৌশলী এইচ এম ফরহাদ হোসেন বলেন, মোংলায় তুলনামূলক লোডশেডিং অনেক কম। তবে রমজান মাসের শুরু থেকেই একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, মোংলা শহরের মেইন লাইনের তার মেয়াদ উত্তীর্ন হয়ে গেছে। এ কারণে তারের ভেতরে তামা পুড়ে বিদ্যুৎ লোড নিতে পারতোনা। তাই এই তার পরিবর্তনের জন্য গত দুই বছর আগে হাতে নেওয়া প্রকল্পের কাজ চলছে। এলাকাভিত্তিক এই উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে, তাই সাময়িক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।