চুয়াডাঙ্গা ১২:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে স্ট্রবেরি চাষ করে ৪ কোটি টাকা বিক্রির আশা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর এলাকার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা রুহুল আমিন রিটন, বিদেশি ফল হলেও বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।

প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে ১১ হাজার কেজি উৎপাদনের আশা করছেন সফল ওই কৃষি উদ্যোক্তা।

 

রুহুল আমিন রিটন জানান, খয়েরহুদা গ্রামের মাঠে ড্রাগনের পতিত জমিতে ২০২২ সালের নভেম্বরে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় গাছগুলো। ৪০ বিঘা জমিতে ৯০ হাজার স্ট্রবেরির চারা রোপণ করেন। বৈরী আবহাওয়া ও ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার চারা মারা যায়।

 

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। কিছুদিন পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। জানুয়ারির শেষের দিক থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি কেজি ফল বিক্রি হচ্ছে বাজারে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।

 

জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষে খরচ হয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে স্ট্রবেরি চাষে। পাকা ফলগুলো প্লাস্টিকের কাপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। গাছের নিচে কচুরিপানা দিয়ে রাখতে হয়। কারণ, ফলগুলো যেন মাটিতে ঠেকে পচে না যায়। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় স্ট্রবেরি বাগান। পরিচর্যার অভাব হলে গাছ ও ফল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া পাখি পাকা ফলগুলো খেয়ে ফেলে। প্রতিদিন ২৫০-৩৫০ কেজি ফল উত্তোলন হচ্ছে।

 

রিটন জানান, স্ট্রবেরি চাষ দেখে প্রথম দিকে মানুষ ভাবত পাগলামি। কারণ, উচ্চমূল্যের এ ফলটি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় শীতপ্রধান দেশে। এখানকার প্রতিকূল আবহাওয়াকে হার মানিয়ে তিনি সফলতা পেয়েছেন। ২৫ হাজার চারা মারা গেলেও রিটন হতাশ হননি। ৬৫ হাজার স্ট্রবেরি গাছ থেকে প্রায় ১১ হাজার কেজি ফল উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক চার কোটি টাকা। স্ট্রবেরি বাগানে প্রতিদিন গড়ে ৬০ শ্রমিক কাজ করেন। ঢাকার কারওয়ান বাজারের ফল মার্কেটে বিক্রি হয় স্ট্রবেরি। সুস্বাদু, রসালো, মিষ্টি ও সুগন্ধি যুক্ত হওয়ায় স্ট্রবেরি ফলটি সব বয়সের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

 

কৃষি উদ্যোক্তা জসিম মণ্ডল বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে স্ট্রবেরি ফল চাষ হওয়ার বিষয়টি শোনার পর বাগানটি দেখতে যাই। বাগানটি ঘুরে দেখলাম। খুব ভালো লাগছে। রিটন ভাইয়ের কাছে পরামর্শ নিয়ে অল্প পরিসরে বাগান করার ইচ্ছা আছে।’

 

স্ট্রবেরি চাষি রুহুল আমিন রিপন বলেন, ‘স্ট্রবেরি ফল চাষ করতে গিয়ে প্রথম দিকে নানাজনের নানা মন্তব্য শুনতে হয়েছে। স্ট্রবেরি চাষ ব্যয়বহুল। ফলন ভালো হওয়ায় লাভ হবে। দেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভরতা হ্রাস পাবে বাগান গড়ে উঠলে। ড্রাগনের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করছি।’

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, রিটনকে স্ট্রবেরি বাজারজাতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এটি উচ্চমূল্যের একটি ফল। দেশে স্ট্রবেরি চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশের বাজারে।

সুত্রঃ সময় নিউজ

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

জীবননগরে স্ট্রবেরি চাষ করে ৪ কোটি টাকা বিক্রির আশা

আপডেটঃ ০৮:২৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর এলাকার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা রুহুল আমিন রিটন, বিদেশি ফল হলেও বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।

প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ করে ১১ হাজার কেজি উৎপাদনের আশা করছেন সফল ওই কৃষি উদ্যোক্তা।

 

রুহুল আমিন রিটন জানান, খয়েরহুদা গ্রামের মাঠে ড্রাগনের পতিত জমিতে ২০২২ সালের নভেম্বরে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় গাছগুলো। ৪০ বিঘা জমিতে ৯০ হাজার স্ট্রবেরির চারা রোপণ করেন। বৈরী আবহাওয়া ও ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫ হাজার চারা মারা যায়।

 

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। কিছুদিন পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। জানুয়ারির শেষের দিক থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যাবে। প্রতি কেজি ফল বিক্রি হচ্ছে বাজারে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়।

 

জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষে খরচ হয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে স্ট্রবেরি চাষে। পাকা ফলগুলো প্লাস্টিকের কাপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। গাছের নিচে কচুরিপানা দিয়ে রাখতে হয়। কারণ, ফলগুলো যেন মাটিতে ঠেকে পচে না যায়। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয় স্ট্রবেরি বাগান। পরিচর্যার অভাব হলে গাছ ও ফল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া পাখি পাকা ফলগুলো খেয়ে ফেলে। প্রতিদিন ২৫০-৩৫০ কেজি ফল উত্তোলন হচ্ছে।

 

রিটন জানান, স্ট্রবেরি চাষ দেখে প্রথম দিকে মানুষ ভাবত পাগলামি। কারণ, উচ্চমূল্যের এ ফলটি সবচেয়ে বেশি চাষ হয় শীতপ্রধান দেশে। এখানকার প্রতিকূল আবহাওয়াকে হার মানিয়ে তিনি সফলতা পেয়েছেন। ২৫ হাজার চারা মারা গেলেও রিটন হতাশ হননি। ৬৫ হাজার স্ট্রবেরি গাছ থেকে প্রায় ১১ হাজার কেজি ফল উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য আনুমানিক চার কোটি টাকা। স্ট্রবেরি বাগানে প্রতিদিন গড়ে ৬০ শ্রমিক কাজ করেন। ঢাকার কারওয়ান বাজারের ফল মার্কেটে বিক্রি হয় স্ট্রবেরি। সুস্বাদু, রসালো, মিষ্টি ও সুগন্ধি যুক্ত হওয়ায় স্ট্রবেরি ফলটি সব বয়সের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

 

কৃষি উদ্যোক্তা জসিম মণ্ডল বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে স্ট্রবেরি ফল চাষ হওয়ার বিষয়টি শোনার পর বাগানটি দেখতে যাই। বাগানটি ঘুরে দেখলাম। খুব ভালো লাগছে। রিটন ভাইয়ের কাছে পরামর্শ নিয়ে অল্প পরিসরে বাগান করার ইচ্ছা আছে।’

 

স্ট্রবেরি চাষি রুহুল আমিন রিপন বলেন, ‘স্ট্রবেরি ফল চাষ করতে গিয়ে প্রথম দিকে নানাজনের নানা মন্তব্য শুনতে হয়েছে। স্ট্রবেরি চাষ ব্যয়বহুল। ফলন ভালো হওয়ায় লাভ হবে। দেশের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানিনির্ভরতা হ্রাস পাবে বাগান গড়ে উঠলে। ড্রাগনের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করছি।’

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, রিটনকে স্ট্রবেরি বাজারজাতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এটি উচ্চমূল্যের একটি ফল। দেশে স্ট্রবেরি চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করছি। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশের বাজারে।

সুত্রঃ সময় নিউজ