চুয়াডাঙ্গা ১০:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ

টানা ৬মাস ধরে নিলাম বন্ধ থাকায় ২০কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মোংলা কাস্টমস হাউস। কাস্টমসের সহযোগী বেসরকারী নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন নিলামকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে বন্ধ রয়েছে কাস্টমসের এ নিলাম কার্যক্রম।

 

কাস্টমস কতৃর্পক্ষ বলছেন, তবে নিলামকারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। ফলে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুনরায় নিলাম শুরু হবে।

 

 

মোংলা কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন জানান, গত নভেম্বর থেকে কাস্টমসের গাড়ীসহ অন্যান্য মালামালের নিলাম কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। মুলত কাস্টমসের নিয়োগকৃত সহযোগী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আলআমিন ট্রেডার্সের নিলাম মেয়াদ শেষ হয়ে যায় নভেম্বরে। এরপর নতুন করে নিলামকারী প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে কার্যক্রম শুরু হয়। নতুন নিলাম প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য গত ২৩জানুয়ারী টেন্ডার আহবাণ করা হয়। সেই টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীদেরকে বাঁধা দেয়াসহ জোরজবরদস্তি করে তাদের দরপত্রের মূল্যের হার জেনে নিয়ে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ .০০১% হারে (১০লাখে ১টাকা) অবমূল্য কমিশন রেট দাখিল করেন।

 

মুলত মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি শহীদুল ও আনোয়ারসহ তাদের সঙ্গীয় ২০/২২জন লোক নিলামে অংশগ্রহণে আসা অপর ব্যক্তিদেরকে বাঁধা দিয়ে সিডিউল ড্রপ করতে নিষেধ করেন। এনিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে বাঁধা সৃষ্টিকারী মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান সিডিউল ড্রপ করেন।

 

এর আগে সকলকে জিম্মি করে তাদের রেট জেনে নিয়ে তারাই (মেসার্স রেডি ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ) সবচেয়ে কম রেট দেয়। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানের (মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজে) অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ অন্যান্য কাগজপত্র/সনদ চাইলে তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়। তাই অতি কাল্পনিক মূল্য ও টেন্ডার প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্থ করার দায়ে ওই টেন্ডারটি বাতিল করা হয়।

 

এরপর ২৮মার্চ নতুন করে আবারো নিলাম টেন্ডার আহবাণ করা হয়। সেখানে কঠিন করে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়ে যে, ট্রেন্ডারে বাঁধাসহ ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হবে। এ শর্তে ৬টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নেন। এবারও মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ তাদের সিডিউল জমা দিয়েছেন। কিন্তু ৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুইটি প্রতিষ্ঠানের রেট ও প্রয়োজনী সকল কাগজপত্র ঠিক থাকায় ওই দুইটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে পযার্লোচনা চলছে। এই দুইটির মধ্যেই একটিকে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিন্তু সিডিউল ড্রপ করার পর থেকে তারাই প্রথম হয়েছেন এমন কাল্পনিক দাবী করে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজের লোকজন কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকতার্দেরকে নানাভাবে হুমকি*ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

 

এ বিষয়ে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ’র মালিক মো: মাজহারুল করিমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে তাকে আবারো ফোন করা হলে তিনি কল কেটে দেন।

 

কাস্টমস কর্মকর্তা রুহুম আমিন বলেন, এর আগে প্রতি মাসে অন্তত দুইটি করে নিলাম হতো। তাতে প্রতি মাসে গাড়ীসহ বিভিন্ন মালামালের নিলাম দেয়া সম্ভব হতো। নিলাম বন্ধ থাকায় গাড়ীসহ নানা পণ্যের জটলার সৃষ্টি হচ্ছে মোংলা বন্দরে। তিনি বলেন, নিলামের অপেক্ষায় রয়েছে ৫শতাধিক আমদানীকৃত রিকন্ডিশন গাড়ী, বিভিন্ন পণ্য বোঝাই দেড়শ কন্টেইনার ও একটি ড্রেজার। তিনি আরো বলেন, ৬মাস ধরে নিলাম বন্ধ থাকায় প্রায় ২০কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মোংলা কাস্টমস হাউস।

 

 

মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, নিলামকারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুনরায় নিলাম কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।

Powered by WooCommerce

২০কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ

আপডেটঃ ০৬:০৫:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩

টানা ৬মাস ধরে নিলাম বন্ধ থাকায় ২০কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মোংলা কাস্টমস হাউস। কাস্টমসের সহযোগী বেসরকারী নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন নিলামকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে বন্ধ রয়েছে কাস্টমসের এ নিলাম কার্যক্রম।

 

কাস্টমস কতৃর্পক্ষ বলছেন, তবে নিলামকারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। ফলে আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুনরায় নিলাম শুরু হবে।

 

 

মোংলা কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন জানান, গত নভেম্বর থেকে কাস্টমসের গাড়ীসহ অন্যান্য মালামালের নিলাম কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। মুলত কাস্টমসের নিয়োগকৃত সহযোগী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আলআমিন ট্রেডার্সের নিলাম মেয়াদ শেষ হয়ে যায় নভেম্বরে। এরপর নতুন করে নিলামকারী প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে কার্যক্রম শুরু হয়। নতুন নিলাম প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য গত ২৩জানুয়ারী টেন্ডার আহবাণ করা হয়। সেই টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীদেরকে বাঁধা দেয়াসহ জোরজবরদস্তি করে তাদের দরপত্রের মূল্যের হার জেনে নিয়ে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ .০০১% হারে (১০লাখে ১টাকা) অবমূল্য কমিশন রেট দাখিল করেন।

 

মুলত মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি শহীদুল ও আনোয়ারসহ তাদের সঙ্গীয় ২০/২২জন লোক নিলামে অংশগ্রহণে আসা অপর ব্যক্তিদেরকে বাঁধা দিয়ে সিডিউল ড্রপ করতে নিষেধ করেন। এনিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে বাঁধা সৃষ্টিকারী মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজসহ মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান সিডিউল ড্রপ করেন।

 

এর আগে সকলকে জিম্মি করে তাদের রেট জেনে নিয়ে তারাই (মেসার্স রেডি ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ) সবচেয়ে কম রেট দেয়। ফলে ওই প্রতিষ্ঠানের (মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজে) অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ অন্যান্য কাগজপত্র/সনদ চাইলে তারা তা দিতে ব্যর্থ হয়। তাই অতি কাল্পনিক মূল্য ও টেন্ডার প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্থ করার দায়ে ওই টেন্ডারটি বাতিল করা হয়।

 

এরপর ২৮মার্চ নতুন করে আবারো নিলাম টেন্ডার আহবাণ করা হয়। সেখানে কঠিন করে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়ে যে, ট্রেন্ডারে বাঁধাসহ ভূয়া কাগজপত্র দাখিল করলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করা হবে। এ শর্তে ৬টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নেন। এবারও মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ তাদের সিডিউল জমা দিয়েছেন। কিন্তু ৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুইটি প্রতিষ্ঠানের রেট ও প্রয়োজনী সকল কাগজপত্র ঠিক থাকায় ওই দুইটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে পযার্লোচনা চলছে। এই দুইটির মধ্যেই একটিকে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিন্তু সিডিউল ড্রপ করার পর থেকে তারাই প্রথম হয়েছেন এমন কাল্পনিক দাবী করে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজের লোকজন কাস্টমসের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকতার্দেরকে নানাভাবে হুমকি*ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

 

এ বিষয়ে মেসার্স রেডিও ইলেকট্রিক এন্টারপ্রাইজ’র মালিক মো: মাজহারুল করিমের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে তাকে আবারো ফোন করা হলে তিনি কল কেটে দেন।

 

কাস্টমস কর্মকর্তা রুহুম আমিন বলেন, এর আগে প্রতি মাসে অন্তত দুইটি করে নিলাম হতো। তাতে প্রতি মাসে গাড়ীসহ বিভিন্ন মালামালের নিলাম দেয়া সম্ভব হতো। নিলাম বন্ধ থাকায় গাড়ীসহ নানা পণ্যের জটলার সৃষ্টি হচ্ছে মোংলা বন্দরে। তিনি বলেন, নিলামের অপেক্ষায় রয়েছে ৫শতাধিক আমদানীকৃত রিকন্ডিশন গাড়ী, বিভিন্ন পণ্য বোঝাই দেড়শ কন্টেইনার ও একটি ড্রেজার। তিনি আরো বলেন, ৬মাস ধরে নিলাম বন্ধ থাকায় প্রায় ২০কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মোংলা কাস্টমস হাউস।

 

 

মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, নিলামকারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পুনরায় নিলাম কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।