আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতির দিকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জ্বালানি তেল আমদানির ওপর অগ্রিম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এ দাম লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমাতে পারে সরকার।
গতকাল সোমবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার পর পরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আন্তর্জাতিক জ্বালানির বাজার অস্থিতিশীল করে ফেলে। গ্যাসের দাম প্রতি ইউনিট ৬৭ ডলারে ওঠে। জ্বালানি তেল ব্যারেলপ্রতি ১৪০ ডলার পেরিয়ে যায়। কয়লার দাম ৪৬০ ডলারে পৌঁছে। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে এগুলোর দাম কমছে।
জনগণকে স্বস্তি দিতে তেল ও কয়লার দামের সমন্বয় দরকার। এসব বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। আগামী বাজেটে যাতে ট্যাক্সের নতুন প্রাইসিংয়ের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেই বিষয়ে এনবিআরের সঙ্গে কথা বলেছি।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল বিদ্যুৎ ভবনে ‘বাজেট ২০২৩-২৪: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগকারীদের চ্যালেঞ্জ এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) এবং বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র মালিকদের সংগঠন বিপ্পা যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
সূত্র জানিয়েছে, এনবিআর আগামী বাজেটে জ্বালানি তেলের অগ্রিম কর কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। বর্তমানে জ্বালানি তেলের ওপর অগ্রিম আয়কর রয়েছে ৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি এখন ৭২ থেকে ৭৮ ডলার। কর কমানো হলে এবং এখন যে দামে বিপিসি তেল কিনছে তাতে সংস্থাটি লাভ করবে।
আর কয়েক মাস পরই জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিতে পারে। লিটারপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম কমতে পারে। জ্বালানি বিভাগ থেকে এমন প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
গত আগস্টে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়। পরে একই মাসে সরকার প্রতি লিটারে ৫ টাকা করে জ্বালানির দাম কমায়। বর্তমানে ডিজেল ও কেরোসিন বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকা, পেট্রোল ১২৫ এবং অকটেন ১৩০ টাকায়।