চুয়াডাঙ্গা ০২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্শনা কেরু চিনিকল শুরু করলো আখ মাড়াই

৬১ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি (২০২৩-২০২৪) আখমাড়াই মৌসুমে শুরু করলো দেশের সবচেয়ে বড় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর চি‌নিকল।

 

আজ শুক্রবার (১৫ ডি‌সেম্বর) বি‌কেল সা‌ড়ে ৩ টায় মাড়াই মৌসুমের শুভ উ‌দ্বোধন উপল‌ক্ষে চি‌নিক‌লের কেইন কে‌রিয়া‌র প্রাঙ্গ‌নে আ‌লোচনা ও দোয়া মাহ‌ফিল শে‌ষে কেইন কে‌রিয়া‌রে আখ নি‌ক্ষেপের মাধ্য‌মে চল‌তি মৌসু‌মের শুভ সুচনা করা হয়।

 

বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের সচিব চৌধুরী রুহুল আ‌মিন কায়সা‌রের সভাপ‌তি‌ত্বে অনু‌ষ্ঠিত দর্শনা চি‌নিক‌লের উ‌দ্বোধ‌নি অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অ‌তি‌থি হি‌সে‌বে উপ‌স্থিত ছি‌লেন বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের চেয়রম্যান শেখ শো‌য়েবুল আলম। বি‌শেষ অ‌তি‌থি হি‌সেবে উপ‌স্থিত ছি‌লেন বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের প‌রিচালক (উৎপাদন ও প্র‌কৌশল) মো: আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কি‌সিঞ্জার চাকমা, চুয়াডাঙ্গা পু‌লিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, জেলা প‌রিষ‌দের চেয়ারম্যান মাহাফুজুর রহমানঞ্জু।

 

বক্তব্য রা‌খেন, চি‌নিক‌লের শ্র‌মিক ইউ‌নিয়‌নের সভাপ‌তি ফি‌রোজ আহা‌ম্মেদ সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান আখচা‌ষি কল্যান স‌মি‌তির সভাপ‌তি আব্দুল বা‌রী বিশ্বাস।

স্বগত বক্তব্য রা‌খেন, দর্শনা কেরু চি‌নিক‌লের ব্যবস্থাপনা প‌রিচালক মোশারফ হো‌সেন।

 

চলতি মৌসুমে ৫৫ মাড়াই দিবসে ৬৫ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চিনিকল কতৃপক্ষ।

চলতি মৌসুমে চিনিকল জোনে আখ রয়েছে ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে। এর মধ্যে চিনিকলের নিজস্ব ১ হাজার ১৫৩ একর জমিতে আখ রয়েছে।

বয়সের ভারে নূয়েপড়া ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় দর্শনা চিনিকলটি বর্তমানে ৬১ কোটি টাকার লোকসানে রয়েছে।

সরকারিভাবে চিনির মুল্য বৃদ্ধির কারণে চলতি মৌসুমে চিনিকলটি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছে কতৃপক্ষ।

 

সম্প্রতি প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে মিলটিতে আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে।

নানা জটিলতার কারণে এলাকার কৃষকরা আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় ক্রমাগত আখ চাষ কমতে থাকায় আখ সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে ঐতিহ্যবাহি এই চিনিকলটিকে।

প্রধান অ‌তি‌থির বক্ত‌ব্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম বলেন, সব ঠিকঠাক চললে চলতি মৌসুমে চিনিতে মোটা অংকের লোকসান কমিয়ে আনতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

 

চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এ জন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসছে। তাই এবার তিন হাজার ৮১০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক ও কর্মচারী ফেডারেশনের নের্তৃবৃন্দ, আখচাচি ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

 

চাষিদের দাবির প্রেক্ষিতে এ মৌসুমে আখের মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এবার প্রতিমণ আখের মূল্য ২২০ টাকা করা হয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, চিনির মূল্য অনুযায়ী আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য আরো বাড়ানোর দাবি চাষিদের।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. ওমর আলী বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে আখচাষিদের এবারের দাবি আখের মূল্য সরাসরি নগদ টাকায় পরিশোধ করা। মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ বা বিকাশে চাষিরা টাকা নেবে না। ঋণের সার, বীজ, কীটনাশক সঠিক সময়ে দিতে হবে এবং চাষিদের কোটায় পাওনা চিনি উত্তোলনের সময় বাড়াতে হবে।

Powered by WooCommerce

দর্শনা কেরু চিনিকল শুরু করলো আখ মাড়াই

আপডেটঃ ০৫:৫৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

৬১ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি (২০২৩-২০২৪) আখমাড়াই মৌসুমে শুরু করলো দেশের সবচেয়ে বড় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর চি‌নিকল।

 

আজ শুক্রবার (১৫ ডি‌সেম্বর) বি‌কেল সা‌ড়ে ৩ টায় মাড়াই মৌসুমের শুভ উ‌দ্বোধন উপল‌ক্ষে চি‌নিক‌লের কেইন কে‌রিয়া‌র প্রাঙ্গ‌নে আ‌লোচনা ও দোয়া মাহ‌ফিল শে‌ষে কেইন কে‌রিয়া‌রে আখ নি‌ক্ষেপের মাধ্য‌মে চল‌তি মৌসু‌মের শুভ সুচনা করা হয়।

 

বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের সচিব চৌধুরী রুহুল আ‌মিন কায়সা‌রের সভাপ‌তি‌ত্বে অনু‌ষ্ঠিত দর্শনা চি‌নিক‌লের উ‌দ্বোধ‌নি অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অ‌তি‌থি হি‌সে‌বে উপ‌স্থিত ছি‌লেন বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের চেয়রম্যান শেখ শো‌য়েবুল আলম। বি‌শেষ অ‌তি‌থি হি‌সেবে উপ‌স্থিত ছি‌লেন বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌র্পো‌রেশনের প‌রিচালক (উৎপাদন ও প্র‌কৌশল) মো: আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কি‌সিঞ্জার চাকমা, চুয়াডাঙ্গা পু‌লিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, জেলা প‌রিষ‌দের চেয়ারম্যান মাহাফুজুর রহমানঞ্জু।

 

বক্তব্য রা‌খেন, চি‌নিক‌লের শ্র‌মিক ইউ‌নিয়‌নের সভাপ‌তি ফি‌রোজ আহা‌ম্মেদ সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান আখচা‌ষি কল্যান স‌মি‌তির সভাপ‌তি আব্দুল বা‌রী বিশ্বাস।

স্বগত বক্তব্য রা‌খেন, দর্শনা কেরু চি‌নিক‌লের ব্যবস্থাপনা প‌রিচালক মোশারফ হো‌সেন।

 

চলতি মৌসুমে ৫৫ মাড়াই দিবসে ৬৫ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চিনিকল কতৃপক্ষ।

চলতি মৌসুমে চিনিকল জোনে আখ রয়েছে ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে। এর মধ্যে চিনিকলের নিজস্ব ১ হাজার ১৫৩ একর জমিতে আখ রয়েছে।

বয়সের ভারে নূয়েপড়া ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় দর্শনা চিনিকলটি বর্তমানে ৬১ কোটি টাকার লোকসানে রয়েছে।

সরকারিভাবে চিনির মুল্য বৃদ্ধির কারণে চলতি মৌসুমে চিনিকলটি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছে কতৃপক্ষ।

 

সম্প্রতি প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে মিলটিতে আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে।

নানা জটিলতার কারণে এলাকার কৃষকরা আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় ক্রমাগত আখ চাষ কমতে থাকায় আখ সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে ঐতিহ্যবাহি এই চিনিকলটিকে।

প্রধান অ‌তি‌থির বক্ত‌ব্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম বলেন, সব ঠিকঠাক চললে চলতি মৌসুমে চিনিতে মোটা অংকের লোকসান কমিয়ে আনতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

 

চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এ জন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসছে। তাই এবার তিন হাজার ৮১০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক ও কর্মচারী ফেডারেশনের নের্তৃবৃন্দ, আখচাচি ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

 

চাষিদের দাবির প্রেক্ষিতে এ মৌসুমে আখের মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এবার প্রতিমণ আখের মূল্য ২২০ টাকা করা হয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, চিনির মূল্য অনুযায়ী আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য আরো বাড়ানোর দাবি চাষিদের।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. ওমর আলী বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে আখচাষিদের এবারের দাবি আখের মূল্য সরাসরি নগদ টাকায় পরিশোধ করা। মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ বা বিকাশে চাষিরা টাকা নেবে না। ঋণের সার, বীজ, কীটনাশক সঠিক সময়ে দিতে হবে এবং চাষিদের কোটায় পাওনা চিনি উত্তোলনের সময় বাড়াতে হবে।