বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যবসা সফল সিনেমার নায়িকা অঞ্জু ঘোষ।বর্তমানে বেশ নিভৃতে জীবন কাটাচ্ছেন এক সময়ের পর্দা কাঁপানো এ নায়িকা।
দেশ ছেড়েছেন ২৪ বছরের বেশি সময়। এখনকার আবাস পাশের দেশ ভারতে। সেখানকার নাগরিকত্বও নিয়েছেন। তবে এ দেশের মানুষ তাঁকে আজও ভোলেনি। চলচ্চিত্রপ্রেমী সবার আজও প্রিয়মুখ তিনি। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ একটি ছবিই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগের পর যুগ। শুধু ছবি অভিনয় নয়, কালজয়ী গান ‘ওরে ও বাঁশিওয়ালা’র জন্যও মনে রাখবে এই মানুষটিকে। তিনি আর কেউ নন, এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জু ঘোষ জানান, পূজা-পার্বণ করেই সময় কেটে যাচ্ছে। আমার বাসায় দুর্গার প্রতিমা রয়েছে। আবার পবিত্র মক্কা শরিফ, খাজা বাবার ছবিও রেখেছি। মানব ধর্মের চেয়ে বড় কোনো ধর্ম নেই।
সারাজীবন লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে কাটিয়েছেন অঞ্জু ঘোষ। পেয়েছেন অসংখ্য অনুরাগীর ভালোবাসা। তবে ব্যক্তিজীবনে তিনি একা। বিয়ে, ঘর-সংসার করেননি এ নায়িকা।
নিজের লাভ লাইফ নিয়ে অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘আমার প্রেমিকদের তালিকা দীর্ঘ। এমনও সময় গেছে, আমাকে দেখার জন্য ঢাকায় আমার বাসার দরজায় সারারাত অপেক্ষা করেছে। তাদের নাম না বলি। তারা সবাই এখন সংসার করছেন। নাম বলে তাদের বিব্রত করতে চাই না।’
তিনি যোগ করেন, ‘সে সময় অনেকেই আমার পেছনে ঘুরঘুর করতো। আমি পাত্তা দিতাম না। মনে হতো, সবাই অর্থের মোহে আমাকে চাইতো।’
বিয়ে না করার কারণ হিসেবে অঞ্জু ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের ‘ম’ আদ্যক্ষরযুক্ত একজন চিত্রনায়কের সঙ্গে আমার সত্যিকারের মন দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। তারপর আর ওই পথে যাইনি।
চলচ্চিত্র পরিচালক এফ কবীর চৌধুরীর সঙ্গে প্রেম-বিয়ের গুঞ্জন প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘তিনি আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। তার সঙ্গে আমার কখনও বিয়ে হয়নি। প্রথম যখন আমার প্রোডাকশন থেকে সিনেমা নির্মাণ করি, সেটি মুক্তির আগে এফ কবীর চৌধুরী আবদার করেন, সিনেমাটি তার ড্রিমল্যান্ড প্রোডাকশন থেকে মুক্তি দিতে হবে। আমি রাজি হইনি। তখন দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগে যায়। সে সময় আমার স্বাক্ষর জাল করে বিয়ের কাবিননামা বানানো হয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, অঞ্জু ঘোষের প্রকৃত নাম অঞ্জলি। ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের মঞ্চনাটকে জনপ্রিয়তার সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৮২ সালে ফোক-ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা এফ কবির চৌধুরীর ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। পরবর্তীতে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সিনেমাটি তাকে রাতারাতি তারকাখ্যাতি এনে দেয়।
২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে পাকাপাকিভাবে কলকাতায় চলে যান অঞ্জু ঘোষ। এরপর দেশের সঙ্গে তেমন একটা যোগাযোগ নেই তার। মাঝে কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন। তবে খুব বেশি সময় থাকেননি। ফিরে গেছেন কলকাতায়।
সুত্রঃ আরটিভি নিউজ