অন্ত্রের স্বাস্থ্য কেবল খাবার হজম হওয়াকে প্রভাবিত করে না, বরং পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য খারাপ হলে তা স্থূলতা, কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ, উদ্বেগ এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি সমস্যার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে অন্ত্রের প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া মূল ভূমিকা পালন করে। উপকারী ব্যাকটেরিয়ার জন্য উপযোগী খাবার প্রয়োজন। সেইসঙ্গে এমন খাবার বাদ দিতে হবে যেগুলো অন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক–
রিফাইন্ড চিনি: আমরা ইতিমধ্যে অতিরিক্ত চিনির সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকটি স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানি। এটি স্থূলতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং আরও অনেক কিছুর দিকে নিয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে চিনি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া দূর করে, যা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। তাই রিফাইন্ড চিনি পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। ব্রাউন সুগার খেতে পারবেন, তবে পরিমিত।
কৃত্রিম সুইটেনার্স: চিনির বদলে অনেকে কৃত্রিম সুইটেনার্স বেছে নেন। পুষ্টিবিদদের মতে, যেহেতু আমাদের দেহ কৃত্রিম উপাদানকে প্রক্রিয়াকরণ (হজম) করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি, তাই কৃত্রিম সুইটেনার্স প্রদাহ সৃষ্টি করে একটি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে। তাই তথাকথিত ‘নিরাপদ’ বিকল্প দুর্বল অন্ত্রের কারণ হতে পারে।
ভাজা খাবার: ঠিক সাদা চিনির মতো ডুবো তেলে ভাজা খাবারও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিন্তু কীভাবে এটি আমাদের অন্ত্র প্রভাবিত করে? স্যাচুরেটেড ফ্যাট ভাজা খাবারের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য, এছাড়াও শক্ত এই খাবার শরীরের পক্ষে হজম করা আরও কঠিন করে তোলে। তাই অন্ত্র সুস্থ রাখার জন্য ডুবো তেলে ভাজা খাবার বাদ দিতে হবে।
উদ্ভিজ্জ তেল: এই ধরনের তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়, তবে আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। উদ্ভিজ্জ তেলে ওমেগা -৬ এবং ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উচ্চ অনুপাত রয়েছে। এটি পেট ফাঁপা এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে অন্ত্রের আস্তরণের ক্ষতি করতে পারে। আপনি ভাবতে পারেন যে ঘি একটি ভাল বিকল্প। তবে এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি, যদিও এর অন্যান্য উপকারিতা রয়েছে। তাহলে কোন ধরনের তেল ব্যবহার করা উচিত? সরিষা? জলপাই? চিনাবাদাম? বিশেষজ্ঞরা একাধিক ধরণের সংমিশ্রণের পরামর্শ দেন।
আল্ট্রা প্রসেসড ফুড: এ ধরনের খাবারে উচ্চ পরিমাণে লবণ, চর্বি, চিনি ইত্যাদি বেশি থাকে। অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের উচ্চ ব্যবহার অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা পরিবর্তন করতে পারে এবং প্রদাহ হতে পারে। অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া বৈচিত্র্যের প্রয়োজন। উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবার স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে ক্ষতিকারক ধরনের ব্যাকটেরিয়া বাঁচিয়ে রাখে।