বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যটির উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত রেলওয়ে স্টেশন থেকে ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত তিনজনই কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘বজরং’ দলের সদস্য। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত রেলস্টেশনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এঁকে তার ওপর দাঁড়িয়ে ছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের বেশ কয়েকজন সদস্য। এসময় পতাকা অবমাননার অভিযোগে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত তিনজনের নাম আর্য দাস, সুবীর দাস ও রিপন চট্টোপাধ্যায় বলে জানা গেছে। তারা যে বজরং দলেরই সদস্য, তা স্বীকার করেছেন সংগঠনের নেতা বাপন বিশ্বাস। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে মুক্তি দেওয়া না হলে তাহলে তারা “বড় আন্দোলনের” পথে হাঁটবেন। সংবাদমাধ্যম বলছে, বারাসত রেলওয়ে স্টেশনে বাংলাদেশের পতাকা এঁকে তার ওপরে দাঁড়ানোর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হল। বুধবার বারাসত স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রং দিয়ে বাংলাদেশের পতাকা আঁকতে থাকেন বজরং দলের সদস্যরা।
পরে সেই পতাকা এঁকে পা দিয়ে মাড়ানোর অভিযোগ ওঠে। আর সেই খবর পেয়েই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে বারাসত পুলিশ। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে অভূতপূর্ব উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়ন এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের অভিযোগে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়েকটি ভারতীয় রাজ্যে বিক্ষোভ হচ্ছে। এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়।
পরে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি আরও ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে ত্রিপুরা পুলিশ। উল্লেখ্য, চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিত্র শেখ হাসিনা। এরপর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে চলছে টানাপোড়েন। এছাড়া পালিয়ে দেশ ছাড়ার পর ভারতে হাসিনার উপস্থিতি নিয়ে ঢাকার অসন্তোষসহ বিভিন্ন কারণে ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনাও প্রকট আকার ধারণ করেছে।