ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা রাজধানীর উত্তরা থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
দিনের আলোতে রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এই ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে নড়ে-চড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যেই ৯ কোটি টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে সাতজনকে।
পুলিশ সূত্রে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ছিনতাই হওয়া ওই টাকা পরিবহনে নিয়োজিত ছিল মানি প্ল্যান্ট লিঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা মেট্রো-চ-৫১-৬৫৭৯০ সিরিয়ালের একটা নোয়াহ গাড়ি মিরপুর ডিওএইচএস থেকে টাকা নিয়ে সাভার ইপিজেডের উদ্দেশে রওনা দেয়।
গাড়িটি মিরপুর ডিওএইচএস পার হয়ে মেট্রোরেলের নিচ দিয়ে দিয়াবাড়ি মেট্রো স্টেশন পার হয়ে ১১ নম্বর ব্রিজ হয়ে যখন সামনের দিকে যাচ্ছিল, তখন পেছন থেকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস এসে ডান থেকে বামে চাপ দিয়ে হর্ন দেয় এবং গাড়িটির গতিরোধ করে।
প্রথমে ছিনতাইকারীরা হর্ন দেওয়া এবং সাইড না দেওয়া নিয়ে টাকা বহনকারী গাড়ির চালকের সঙ্গে ঝগড়া করে। এরপর গাড়ির চালক ও সুপারভাইজারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আনে। ছিনতাইকারী দলের একজন টাকার গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসেন।
তিনি গাড়িটি চালিয়ে নিয়ে কিছুটা সামনে নিয়ে দাঁড় করান। ওই সময় গাড়িটিতে কোম্পানির একজন ম্যানেজার ছিলেন। তাকে মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে গাড়িতে থাকা টাকার চারটি ট্রাঙ্ক নামান। কালো রংয়ের আরেকটি হাইয়েস গাড়িতে করে ছিনতাইকারীরা সেই টাকাভর্তি ট্রাঙ্কগুলো নিয়ে চলে যায়।
ছিনতাই শেষে গাড়িটি রাজউকের ভবনের পাশ দিয়ে ১৮ নম্বর সেক্টরের রাস্তা হয়ে সামনে থেকে ইউটার্ন নিয়ে ১০ নম্বর সড়ক হয়ে পালিয়ে যায়। এত বড় ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারীদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না।
এই ঘটনায় গাড়িতে থাকা ভুক্তভোগীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিস্তারিত জানান। ৯৯৯-এর মাধ্যমে থানা পুলিশ জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যায়। এরপর ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানে নেমে উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইকারীদের ধরতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।