চুয়াডাঙ্গা ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষঃ

আলমডাঙ্গায় পরকীয়া প্রেমিককে সাথে নিয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী গ্রেফতার

আলমডাঙ্গার মোচাইনগরের আসাদুজ্জামান হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক স্ত্রী মোনালিসা হক লোপাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সিআইডির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

মোনালিসা হক লোপা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল পাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে। এ মামলার সন্দেহমূলক আরেক আসামি বাচ্চুকেও সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর আলমডাঙ্গার মোচাইনগর গ্রামের গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে আসাদুজ্জামানের সাথে বিয়ে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালপাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে মোনালিসা হক লোপার। চাকরির সুবাদে যশোর এমএম কলেজের পার্শ্বে ভাড়াবাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন তারা।

 

একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন নরসিংদী জেলার বাখরনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ন কবির। সেখানে বসবাস করা সময়ে মোনালিসা হক লোপার সাথে হুমায়ন কবিরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে তার ভাই মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরকে এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে বলেন। কথা না শুনে তারা প্রেমের সম্পর্কে চালিয়ে যাওয়ায় পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়।

 

 

অবস্থা বেগতিক দেখে আসাদুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা শহরে চলে এসে বসবাস শুরু করেন। মোনালিসা চুয়াডাঙ্গায় আসার পরও হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এরই মধ্যে মোনালিসা হক লোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বারংবার মোনালিসা হক লোপাকে নিষেধ করেও থামাতে পারেনি তার ভাই।

 

 

২০২০ সালের ২৭ মার্চ রাতে আসাদুজ্জামান অসুস্থ বলে বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎক আসাদুজ্জামানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরদিন ২৮ মার্চ গ্রামের বাড়িতে মরদেহ এনে পার্শ্ববর্তী চান্দামারী গ্রামের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। আসাদুজ্জামান মারা যাওয়ার পর ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর তারিখে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ুন কবির বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ুন কবিরের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধের কারণে মোনালিসা হক লোপা কিভাবে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করেছে হুমায়ুন কবির সব তথ্য-উপাত্ত আসাদুজ্জামানের পরিবারকে জানিয়ে দেন।

 

ঘটনাটি জানার পর ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছর ২৫ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ। ১৪ মার্চ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আসাদুজ্জামানের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় দাফন করা হয়। এ মামলায় হুমায়ুন কবির গ্রেফতার হলেও মোনালিসা পলাতক ছিলেন। বর্তমানে হুমায়ুন কবীর জামিনে মুক্ত থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সিআইডি তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আজ বুধবার সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে।

প্রসংঙ্গ :
avashnews

বস্ত্র ও পাঠ মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি MOTJ Job circular 2025

avashnews

Powered by WooCommerce

আলমডাঙ্গায় পরকীয়া প্রেমিককে সাথে নিয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী গ্রেফতার

আপডেটঃ ০১:৫৬:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আলমডাঙ্গার মোচাইনগরের আসাদুজ্জামান হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক স্ত্রী মোনালিসা হক লোপাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গার তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা সিআইডির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

মোনালিসা হক লোপা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল পাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে। এ মামলার সন্দেহমূলক আরেক আসামি বাচ্চুকেও সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর আলমডাঙ্গার মোচাইনগর গ্রামের গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে আসাদুজ্জামানের সাথে বিয়ে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালপাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে মোনালিসা হক লোপার। চাকরির সুবাদে যশোর এমএম কলেজের পার্শ্বে ভাড়াবাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন তারা।

 

একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন নরসিংদী জেলার বাখরনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ন কবির। সেখানে বসবাস করা সময়ে মোনালিসা হক লোপার সাথে হুমায়ন কবিরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে তার ভাই মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরকে এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে বলেন। কথা না শুনে তারা প্রেমের সম্পর্কে চালিয়ে যাওয়ায় পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়।

 

 

অবস্থা বেগতিক দেখে আসাদুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা শহরে চলে এসে বসবাস শুরু করেন। মোনালিসা চুয়াডাঙ্গায় আসার পরও হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এরই মধ্যে মোনালিসা হক লোপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। বারংবার মোনালিসা হক লোপাকে নিষেধ করেও থামাতে পারেনি তার ভাই।

 

 

২০২০ সালের ২৭ মার্চ রাতে আসাদুজ্জামান অসুস্থ বলে বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎক আসাদুজ্জামানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরদিন ২৮ মার্চ গ্রামের বাড়িতে মরদেহ এনে পার্শ্ববর্তী চান্দামারী গ্রামের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। আসাদুজ্জামান মারা যাওয়ার পর ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর তারিখে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ুন কবির বিয়ে করেন। বিয়ের পর মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ুন কবিরের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধের কারণে মোনালিসা হক লোপা কিভাবে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করেছে হুমায়ুন কবির সব তথ্য-উপাত্ত আসাদুজ্জামানের পরিবারকে জানিয়ে দেন।

 

ঘটনাটি জানার পর ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই বছর ২৫ জানুয়ারি মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ। ১৪ মার্চ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে আসাদুজ্জামানের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় দাফন করা হয়। এ মামলায় হুমায়ুন কবির গ্রেফতার হলেও মোনালিসা পলাতক ছিলেন। বর্তমানে হুমায়ুন কবীর জামিনে মুক্ত থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সিআইডি তালতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আজ বুধবার সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে।