পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টিউবয়েল ও ইলেক্ট্রিক মটরগুলোতে পানি কমে গিয়েছে। এরমধ্যে অনেক টিউবয়েল ও ইলেক্ট্রিক মটরগুলোতে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে পানযোগ্য পানির।
চুয়াডাঙ্গা জেলা দেশের অন্যান্য জেলা থেকে অনেটায় উচু।ফলে উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় নিচের দিকে নামছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস সুত্রে যানাগেছে, উপজেলায় সরকারি সাড়ে ৪হাজার ও বেসরকারী মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার নলকূপ রয়েছে। এরমধ্যে প্রায় হাজার খানেক অকেজো হয়ে রয়েছে।
এছাড়াও দামুড়হুদা উপজেলা সদর, সদাবরী মদনা,দর্শনা,নতিপোতা,হাউলি,কুড়ুলগাছি,কার্পাসডাঙ্গা,কুতুবপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে এক হাজারের অধিক নলকূপে একেবারে উঠছে না পানি। বাকি টিউবয়েল গুলোতে সামান্য পানি উঠছে। যে পরিমান পানি উঠছে তাতে পরিবারের চাহিদা পুরন হচ্ছে না।পানির জন্য অন্যত্রে ছুটতে হচ্ছে। ধীরে ধীরে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারনে অনেকের বাড়ীর নলকুপের পানি কম উঠায় স্থান পরিবর্তন করে নলকুপ বসানো হলেও একই অবস্থার সৃষ্ঠি হচ্ছে।এমন অবস্থায় অনেকে রান্না,কাপড়চোপড় পরিস্কার করার কাজে ব্যবহার করছে এক সময়কার অব্যবহৃত কুয়া বা ইন্দারার পানি।
ভুক্তভোগী কার্পসডাঙ্গার ঔষধ ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমানসহ অনেকে বলেন,তার বাড়ীর মটরে পানি উঠছে না বললেই চলে। ভুক্তভোগীদের মতে, আগে ১৫-২০ মিনিট মোটর চালালেই বাড়ির ছাদের ট্যাংক পূর্ণ হয়ে যেতো। প্রায় মাস দেড়েক আগে থেকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা মোটর চালালেও প্রয়োজনীয় পানি মিলছে না। এভাবে চলতে গিয়ে নষ্ট হচ্ছে বৈদ্যুতিক মোটর।পানির স্তর নেমে যাওয়ায় মটর মাটির ১০/১২ফুট নিচে নামিয়ে পানির চাহিদা মিটানো হচ্ছে। টিউবয়েলের একই অবস্থা পানি তো উঠছেনই না সামান্য পানি উঠলেও কল এতো পরিমান কড়া হয়েছে চাপাও দুসাধ্য হয়ে পড়েছে।
অসাবধানে কল চাপলে হ্যান্ডেল ছিটকে মুখে লেগে রক্তাক্ত জখম হওয়ার আশংখা ও রয়েছে।গ্রামের অনেককেই পানযোগ্য এক কলসি পানি আনতে অন্যেও বাড়ী যেতে হচ্ছে। কুড়ুলগাছি গ্রামের মহাজের আলি বলেন, গ্রামের অধিকাংশ টিউবয়েলে পানি উঠছেনা। এতে অনেক পরিবার পানি সংকটে পড়েছে। তাই গ্রামে তার একটি ইন্দার রয়েছে সে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে সেখান থেকে অনেকেই পানিনিচ্ছে।
দামুড়হুদা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর ৬থেকে ৮ ফুট নিচে নামছে পানির স্তর। বছর দশেক আগে এই এলাকায় ৪০থেকে ৬০ ফুটের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেতো। এখন বর্ষা মৌসুমে ১০০থেকে ১২০ফুট উপরে পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে না।অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং যত্রতত্র পুকুর-খাল-বিল ভরাটের ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সামনে বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন,নলকুপে পানি ধরে রাখতে এখন সাব-মার্সেবুল পাম্প যুক্ত ও তারা নলকুপ বসানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।