দেশের সর্বোচ্চ দবদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। প্রচন্ড এই দাবদাহে সাধারণ মানুষ যখন ঘরমুখো, তখন এই দাবদাহ থেকে অসহায় দরিদ্র রিক্সা ভ্যান চালক ও পথচারিদের একটু স্বস্থি দিতে ও পিপাসা নিবারণের জন্য ছুটে চলেছেন জেলার মানবিক এক পুলিশ সদস্য (পুলিশের নায়েক)।
চাকরির (ডিউটি) ফাঁকে সময় সুযোগ পেলেই তিনি ছুটে যান শহরের এ প্রান্ত থেকে ও পান্তে। খুঁজে বেড়ান অসহায় দরিদ্র রিক্সা ভ্যান চালক ও পথচারিদের। তাদেরকে পেলেই তিনি নিজের বেতনের টাকাদিয়ে কেনা ছাতা, ডাব, বিশুদ্ধ পানি ও খাওয়ার স্যালাইন তুলে দেন তাদের হাতে।
কে এই মানবক পুলিশ সদস্য?
যশোর জেলার শার্শা উপজেলার টেংরালী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম মল্লিকের ছেলে মানবিক এই পুলিশ সদস্য ইসমাইল হোসেন (২৭)।
২০১৬ সালে যশোর জেলা থেকে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিতে যোগদান করেন ইসমাইল হোসেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমান পুলিশের নায়ক পদে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত আছেন মানবিক এই পুলিশ সদস্য। চুয়াডাঙ্গায় যোগদানের পর থেকেই তিনি মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অসহায়, দরিদ্র ও প্রতিবন্ধিদের জন্য বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করে থাকেন। এসব কারণে খুব অল্প সময়ে তিনি জেলাবাসীর কাছে মানবিক পুলিশ সদস্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
মানবিক এই পুলিশ সদস্য জানান, ছোট বেলা থেকেই গরীর দু:খি অসহায় মানুষের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছা ছিল। আমার সে স্বপ্নটা পুরণ হতে শুরু করে আমি চাকরিতে জয়েন করার পর। চাকরিতে জয়েন করার পর থেকেই আমি বেতনের একটা অংশ গরীর দু:খি অসহায় মানুষের জন্য ব্যায় করি।
তারই ধারাবাহিকতায় দাবদাহে যখন সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকেও হিট এলাট জারি করা হয়েছে। এমন অবস্থায় দেশের সর্বোচ্চ দাবদাহে যখন পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। সে সময় হিট স্ট্রোকের ঝুকি মাথায় নিয়ে খালি মাথা জেলা শহরে রিক্সা ভ্যান চালাচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া দরিদ্র শ্রেণীর বয়ষ্ক মানুষ। পাশাপাশি ফটপাতদিয়ে হাটছে পিপাসা কাতর মানুষ। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থেকে সামান্য কিছুটা স্বস্থি দিতে ভ্যান চালক ও রিক্সা চালকদের জন্য ছোট ছাতা, ডাবের পানি, স্যালাইন বিশুদ্ধ পানি এবং পথচারীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার স্যালাইন, চাকরির ফাঁকে সময় সুযোগ পেলেই চুয়াডাঙ্গা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছুটে যায় এসব বিতরণ করতে।
আমার এই সামান্য সহযোগীতায় তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহ থেকে অসহায় দরিদ্র মানুষের কিছুটা হলেও প্রশান্তি মেলে। এসময় ওই সব মানুষের হাসি আর আনন্দ দেখে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
আল্লাহ সমর্থ দিলে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত অসহায় দরিদ্র এসব মানুষের জন্য আমার সাধ্যমত সহযোগীতা থাকবে।
তিনি বলেন, এই দুর্ষহ দাবদাহ থেকে অসহায় দরিদ্র মানুষদের পাশে দাড়াতে সমাজের বৃত্তবানদেন প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
সংবাদকর্মী শিরিন জামান জানান, সত্যিই এই পুলিশ সদস্য প্রশংসার দাবীদার। তাকে দেখে সমাজের বৃত্তবানরাও উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।