কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এ বছর জায়গা পায়নি বাংলাদেশের সিনেমা। কিন্তু ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতীয় সিনেমা থাকবে। সেসবের অন্যতম সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ও চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত সিনেমা ‘পদাতিক’।
চলতি মাসের ৪ তারিখ ভারতে শুরু হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানে ২৯টি দেশের ১৮০টি সিনেমা জায়গা করে নিয়েছে। তালিকায় নেই বাংলাদেশের কোনো সিনেমা। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও ভিসা জটিলতাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন আয়োজকেরা। অন্যদিকে আগামী ১১ জানুয়ারি শুরু হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ৯ দিনের উৎসবে দেখানো হবে ৭৫টি দেশের ২৫০টি সিনেমা।
ঢাকার এ উৎসবের এশিয়ান ফিল্ম কমপিটিশন বিভাগে রয়েছে দুটি ভারতীয় সিনেমা। জটলা সিদ্ধার্থের ‘ইন দ্য বেলি অব আ টাইগার’ ও সৌমিক রায় চৌধুরীর ‘বেলাইন’। সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ দেখা যাবে সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড বিভাগে। এ ছাড়া আরও দুই বা তিনটি ভারতীয় সিনেমা থাকবে এ বছরের উৎসবে। ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতীয় সিনেমা অন্তর্ভুক্তি প্রসঙ্গে উৎসবের আয়োজক রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘প্রতিবার ২৫-৩০টা ভারতীয় সিনেমা দেখাই, কিন্তু এবার নানান কারণে কম থাকছে।’
আমরা সিনেমাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এখানে পাকিস্তানের সিনেমা যেমন আছে, তেমনি ভারত, চীনসহ ৭০টির বেশি দেশের সিনেমা আছে। আমরা দেশ বিবেচনায় সিনেমা নির্বাচন করিনি
কলকাতার উৎসবে বাংলাদেশি সিনেমা নেই, ঢাকায় ভারতীয় সিনেমা আছে। এটা কি বাংলাদেশের উদারতা? এমন প্রশ্নে আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব সরকারি আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশের সিনেমা কেন নেই তার যথাযথ উত্তর দিতে পারবে উৎসব কর্তৃপক্ষ ও তাদের সরকার। ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত উৎসবে কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা ছিল। ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব সরকারি কোনো আয়োজন নয়। আমরা সিনেমাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এখানে পাকিস্তানের সিনেমা যেমন আছে, তেমনি ভারত, চীনসহ ৭০টির বেশি দেশের সিনেমা আছে। আমরা দেশ বিবেচনায় সিনেমা নির্বাচন করিনি। এ ছাড়া সরকার থেকে আমাদের এমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি যে, নির্দিষ্ট কোনো দেশের সিনেমা দেখানো যাবে না।’
গতবার ঢাকার এ উৎসবে এসেছিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, কণ্ঠশিল্পী, অভিনেতা ও নির্মাতা অঞ্জন দত্তরা। এবার ভারতীয় কিছু সিনেমা থাকলেও উৎসবে দেখা যাবে না ভারতীয় কোনো নির্মাতা ও কলাকুশলীকে। অংশ নেওয়া সিনেমার সংখ্যাও অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক কম বলে জানান আহমেদ মুজতবা জামাল। তিনি বলেন, ‘এবার চলচ্চিত্র উৎসবে ভারতের সিনেমার সংখ্যা কমে গেছে। জমা পড়েছিল ১ শতাধিক সিনেমা। ভিসা জটিলতার কারণে এবারের উৎসবে ভারতের কোনো ফিল্মমেকার, কলাকুশলী বা অতিথি আসছেন না।’ বড় তারকা না থাকলেও বিভিন্ন দেশের নির্মাতা ও চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা উৎসবে আসবেন।
এ উৎসবে ছবির সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। উৎসব কর্তৃপক্ষ জানায় বেশি সংখ্যক সিনেমার বদলে মানসম্মত একটি উৎসব আয়োজন করাই তাদের মূল লক্ষ্য। ছবির সংখ্যা কম হওয়ার অন্যকম কারণ সেন্সর ফি উৎসব কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হয়। আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘সিনেমা নিয়ে পলিটিক্সে আমি আগ্রহী নই। এটা আন্তর্জাতিক উৎসব। এ কারণে সব দেশের সিনেমাকে এখানে জায়গা দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর ইরানের ২৫-৩০টা সিনেমা দেখানো হয়। এবার থাকবে ১০-১২টি সিনেমা। সিনেমার সংখ্যার বদলে একটা মানসম্মত উৎসব করাই আমাদের বিবেচ্য বিষয়।’