চুয়াডাঙ্গা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দামুড়হুদায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের নামে লুটপাত, জমি, ঘর-বাড়ি জবরদখল চেষ্টা

দেশের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে পুঁজি করে দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগি গ্রামের একাধিক স্থানে বিএনপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে জোর পূর্বক সন্ত্রাসী কৌশলে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে জমি দখলের মহাউৎসবে মেতে উঠেছে কিছু আওয়ামী প্রেতাত্মা। তারা টাকার দাপটে দীর্ঘ দিনের আওয়ামীলীগের গ্যাং গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল বিলে বিষ দিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ৬/৭ জন দেশিয় তৈরী অস্ত্র ধারালো হাসুয়া, লোহার রড নিয়ে ৪/৫ টি স্থানে তান্ডব চালিয়েছে। ভেঙ্গে দিয়েছে অসহায় দুস্থ মানুষের ঘরবাড়ি ও জোর পূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে দোকানপাট। এ ঘটনার স্বীকার হয়েছে একেবারেই সাধারণ নিরীহ জনগন। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে এক সময় দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের শাকিল ও হারুন যুবলীগের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আর তারাই এখন বিএনপির পরিচয় দিয়ে নিরিহ মানুষের উপর অন্যায় ভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সরজমিনে ঘটনাস্থল গুলো ঘুরে জানাগেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর গ্রামের মজিবার হোসেনের ছেলে শাকিল (৩২), আবু হোসেনের ছেলে হারুন দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে হাউলী ইউনিয়ন দাঁপিয়ে বেড়িয়েছে। আর তারাই এখন বিএনপির পরিচয় দিয়ে লোকনাথ ও ডুগডুগি গ্রামের অসহায় মানুষের ঘর, বাড়ি ভাংচুর, বিলের মাছ লুটপাট ও জমি দখলে মরিয়ে হয়ে পড়েছে।
গত দুদিন আগে তারা উপজেলার ডুগডুগি কাদিপুর মরা গাং-এ বিষ দিয়ে প্রায় ৩৫/৪০ লক্ষ টাকার মাছ লুটপাট করে নেয়। এরপর ডুগডুগি গ্রামের আসহায় আশা পাগলের বাড়ি আক্রমণ করে বিভিন্ন জিনিস ভাংচুর করে। পাশে আরও দুটি বাড়িতে ভাংচুর, লোকনাথপুর গ্রামে বিবাদপূর্ণ জমির প্রায় ২০ লক্ষ টাকার কাঁঠাল গাছ কেটে নেয়। এমনকি সিএমবির জমির গাছ কেটে কাটা তারের বেড়া দিয়ে রেখেছে। এছাড়াও ডুগডুগি হাসপাতাল পাড়ায় ২০/২৫ বছর ধরে ক্রয়কৃত জমিতে বসবাসকারী একই পড়ার রসিদ, হাসান, রফিকুল, ভারতি, শেফালী, শফির পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের জন্য হুমকি ধামকি চাপ প্রয়োগ ও মারধরের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। হাসপাতাল পাড়াটিকে একেবারেই জনশূন্য করার পায়তারা করছে। ওই এলাকাজুড়ে একই গ্রুপের এমন তান্ডবে স্থানীয়রা চরম আতংকে দিন যাপন করছে। শুধু তাইনা ডুগডুগি বাজারে বিএনপি কর্মী কাশেমের ক্রয়কৃত দোকান দখল নেওয়ার জন্য তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়ও তারা। কাশেম এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছে।
ডুগডুগি গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় অসংখ্য মানুষ বলেছেন, আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পর থেকেই এই গ্রুপটি এলাকায় আসহায় মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপিড়ন শুরু করেছে। এরা শত কোটি টাকার মালিক, টাকার গরমে এরা সাধারণ মানুষের জমি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগী দুস্থ অসহায় পুতুল আক্তার বলেন, ক্রয় সুত্রে এই জমিতে আমরা গত ৩০/৩৫ বছর ধরে বসবাস করছি। হঠাৎ গত দুই দিন থেকে লোকনাথপুরের শাকিল, হারুন, মুন্নাফ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ৮/১০ জনকে সাথে নিয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে ভাংচুর করে, বিভিন্ন ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। এই ভিটে থেকে চলে যেতে বলে। তাদের এসব হুমকি ধামকিতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতাই ভূগছি। এই সংবাদ পেয়ে বিএনপির নেতারা আমার বাড়ি এসে খোঁজ খবর নিয়েছে এবং অভয় দিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন, শাকিল ও হারুনের বিষয়ে আমার কাছে বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেছে। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে জোর পূর্বক জমি দখল করতে গিয়ে আমাদের ডুগডুগি গ্রামে অনেক তান্ডব চালিয়েছে। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তারা খাল,বিলে বিষ দিয়ে প্রায় ৩০/৩৫ লক্ষ টাকার মাছ লুট করেছে। তারা বিএনপির কোন সদস্য কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কোন সদস্য নয় এবং কখনো ছিলনা। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে যে অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে এর জন্য বিএনপি কোন দায় নেবেনা। যার দায় তাকেই বহন করতে হবে। এই সংবাদ পেয়ে আমি বিএনপির নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে অসহায় পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে নাশকতা, ঘরবাড়ি ভাংচুর, পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ লুট, ডুগডুগি হাসপাতালের পেছনে একই পাড়ার প্রায় ১০/১২ টি ঘর,বাড়ি উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে হারুন, শাকিল ও মুন্নাফ। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এছাড়াও জোরপূর্বক হুমকি ধামকি দিয়ে ডুগডুগির কাসেমের দোকান বন্ধ করে দেয়। প্রকৃত পক্ষে তারা বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ না। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পরিবার গুলোর সাথে আমি কথা বলেছি। আমার বিএনপির নেতৃবৃন্দ কোনো প্রকার অন্যায় কাজ করে না, তাই তাদের ছাড় দেয়াও হবে না। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা কে অবগত করেছি।

Powered by WooCommerce

দামুড়হুদায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের নামে লুটপাত, জমি, ঘর-বাড়ি জবরদখল চেষ্টা

আপডেটঃ ০২:১৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০২৪
দেশের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে পুঁজি করে দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগি গ্রামের একাধিক স্থানে বিএনপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে জোর পূর্বক সন্ত্রাসী কৌশলে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ভাংচুর করে জমি দখলের মহাউৎসবে মেতে উঠেছে কিছু আওয়ামী প্রেতাত্মা। তারা টাকার দাপটে দীর্ঘ দিনের আওয়ামীলীগের গ্যাং গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এরাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল বিলে বিষ দিয়ে লাখ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ৬/৭ জন দেশিয় তৈরী অস্ত্র ধারালো হাসুয়া, লোহার রড নিয়ে ৪/৫ টি স্থানে তান্ডব চালিয়েছে। ভেঙ্গে দিয়েছে অসহায় দুস্থ মানুষের ঘরবাড়ি ও জোর পূর্বক বন্ধ করে দিয়েছে দোকানপাট। এ ঘটনার স্বীকার হয়েছে একেবারেই সাধারণ নিরীহ জনগন। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে এক সময় দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের শাকিল ও হারুন যুবলীগের ক্যাডার হিসেবে এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে। আর তারাই এখন বিএনপির পরিচয় দিয়ে নিরিহ মানুষের উপর অন্যায় ভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
সরজমিনে ঘটনাস্থল গুলো ঘুরে জানাগেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের লোকনাথপুর গ্রামের মজিবার হোসেনের ছেলে শাকিল (৩২), আবু হোসেনের ছেলে হারুন দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে হাউলী ইউনিয়ন দাঁপিয়ে বেড়িয়েছে। আর তারাই এখন বিএনপির পরিচয় দিয়ে লোকনাথ ও ডুগডুগি গ্রামের অসহায় মানুষের ঘর, বাড়ি ভাংচুর, বিলের মাছ লুটপাট ও জমি দখলে মরিয়ে হয়ে পড়েছে।
গত দুদিন আগে তারা উপজেলার ডুগডুগি কাদিপুর মরা গাং-এ বিষ দিয়ে প্রায় ৩৫/৪০ লক্ষ টাকার মাছ লুটপাট করে নেয়। এরপর ডুগডুগি গ্রামের আসহায় আশা পাগলের বাড়ি আক্রমণ করে বিভিন্ন জিনিস ভাংচুর করে। পাশে আরও দুটি বাড়িতে ভাংচুর, লোকনাথপুর গ্রামে বিবাদপূর্ণ জমির প্রায় ২০ লক্ষ টাকার কাঁঠাল গাছ কেটে নেয়। এমনকি সিএমবির জমির গাছ কেটে কাটা তারের বেড়া দিয়ে রেখেছে। এছাড়াও ডুগডুগি হাসপাতাল পাড়ায় ২০/২৫ বছর ধরে ক্রয়কৃত জমিতে বসবাসকারী একই পড়ার রসিদ, হাসান, রফিকুল, ভারতি, শেফালী, শফির পরিবারকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের জন্য হুমকি ধামকি চাপ প্রয়োগ ও মারধরের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। হাসপাতাল পাড়াটিকে একেবারেই জনশূন্য করার পায়তারা করছে। ওই এলাকাজুড়ে একই গ্রুপের এমন তান্ডবে স্থানীয়রা চরম আতংকে দিন যাপন করছে। শুধু তাইনা ডুগডুগি বাজারে বিএনপি কর্মী কাশেমের ক্রয়কৃত দোকান দখল নেওয়ার জন্য তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়ও তারা। কাশেম এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছে।
ডুগডুগি গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় অসংখ্য মানুষ বলেছেন, আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পর থেকেই এই গ্রুপটি এলাকায় আসহায় মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপিড়ন শুরু করেছে। এরা শত কোটি টাকার মালিক, টাকার গরমে এরা সাধারণ মানুষের জমি জবরদখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগী দুস্থ অসহায় পুতুল আক্তার বলেন, ক্রয় সুত্রে এই জমিতে আমরা গত ৩০/৩৫ বছর ধরে বসবাস করছি। হঠাৎ গত দুই দিন থেকে লোকনাথপুরের শাকিল, হারুন, মুন্নাফ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ৮/১০ জনকে সাথে নিয়ে আমার বাড়িতে আক্রমণ করে ভাংচুর করে, বিভিন্ন ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। এই ভিটে থেকে চলে যেতে বলে। তাদের এসব হুমকি ধামকিতে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতাই ভূগছি। এই সংবাদ পেয়ে বিএনপির নেতারা আমার বাড়ি এসে খোঁজ খবর নিয়েছে এবং অভয় দিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে হাউলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন, শাকিল ও হারুনের বিষয়ে আমার কাছে বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেছে। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে জোর পূর্বক জমি দখল করতে গিয়ে আমাদের ডুগডুগি গ্রামে অনেক তান্ডব চালিয়েছে। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তারা খাল,বিলে বিষ দিয়ে প্রায় ৩০/৩৫ লক্ষ টাকার মাছ লুট করেছে। তারা বিএনপির কোন সদস্য কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কোন সদস্য নয় এবং কখনো ছিলনা। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে যে অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে এর জন্য বিএনপি কোন দায় নেবেনা। যার দায় তাকেই বহন করতে হবে। এই সংবাদ পেয়ে আমি বিএনপির নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে অসহায় পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়িয়েছি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে নাশকতা, ঘরবাড়ি ভাংচুর, পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ লুট, ডুগডুগি হাসপাতালের পেছনে একই পাড়ার প্রায় ১০/১২ টি ঘর,বাড়ি উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে হারুন, শাকিল ও মুন্নাফ। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এছাড়াও জোরপূর্বক হুমকি ধামকি দিয়ে ডুগডুগির কাসেমের দোকান বন্ধ করে দেয়। প্রকৃত পক্ষে তারা বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের কেউ না। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পরিবার গুলোর সাথে আমি কথা বলেছি। আমার বিএনপির নেতৃবৃন্দ কোনো প্রকার অন্যায় কাজ করে না, তাই তাদের ছাড় দেয়াও হবে না। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা কে অবগত করেছি।