একজন নারী, যিনি সামাজিক অবক্ষয়ে হারিয়ে গেছেন সমাজেরই কোন অলিগলিতে। সেই নারীকে খোঁজার গল্প নিয়ে গাইবান্ধায় মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘নোটবুক’। সমাজের অতি পরিচিত একটি অপরাধের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর অন্তিম করুণ পরিণতি এই ম নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গাইবান্ধা থিয়েটারের আয়োজনে সোমবার (৫ জুন) রাতে নাটকটি পরিবেশন করেন ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা নাটকের দল অভিমুখ। এতে সহযোগিতা করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্ন কেন্দ্র। নাটকটি রচনা আর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রশান্ত এস ধর। ৩০ মিনিট ব্যাপ্তীর এই নাটকে একক অভিনয় করেছেন অভিজিৎ দাস। ত্রিপুরার অভিমুখ নাট্যদলের সংগঠক রঞ্জিত পুরকায়স্থ ও অভিক কুমার দে জানালেন, নোটবুক, একটি নারীকে খোঁজার গল্প।
যে হারিয়ে গেছে এই সমাজের কোনো এক অজানা-অচেনা গলিতে। তার হারিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো না, কথা ছিলো না তাকে খোঁজারও। তবে এই সমাজে নানান সামাজিক অবক্ষয় প্রতিদিন আমাদের ভাবায়। এমন এক অবক্ষয়ের শিকার সেই নারী। কিছু করার আছে কি? সেই জায়গায় ধাক্কা মারার কাজ নোটবুক এর। সমাজের অতি পরিচিত একটি অপরাধের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর অন্তিম করুণ পরিণতির নির্দেশ করা হয়েছে এই নাটকে।
নাটকের প্রসঙ্গে গাইবান্ধা থিয়েটার সভাপতি আলমগীর কবির বাদল বলেন, নোটবুক, একটি নিরীক্ষাধর্মী নাটক। নিরীক্ষা ও উপস্থাপনার ভারসাম্য বজায় রেখেছে অভিমুখুর নিরীক্ষাধর্মী এ প্রযোজনাটি। সেট, লাইট ও মিউজিকের পূর্ণ সমন্বয় আর সার্বিক আয়োজনে একটি পরিপূর্ণ ও দুর্দান্ত নাটক উপহার দেওয়ার জন্য কুশীলব এবং নেপথ্য শিল্পীদের প্রতি অকুণ্ঠ অভিবাদন। নাট্যাঙ্গনে পেশাদারিত্ব সৃষ্টিতে প্রযোজনাটি আমাদের আশাবাদী করে।
নাটক শেষে অভিমুখ নাট্যদলের সদস্যদের গাইবান্ধা থিয়েটারের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এছাড়াও মেঘদূত, বিবর্তণ, মানবাধিকার নাট্য পরিষদ সহ গাইবান্ধার বিভিন্ন নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও ভারতের ত্রিপুরার এ নাটকের দলটিকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এসময় মুক্তিযুদ্ধ গবেষক জহুরুল কাইয়ুম, কবি ও সাংবাদিক অমিতাভ দাশ হিমুন, গাইবান্ধা থিয়েটার সভাপতি আলমগীর কবির বাদল, আরিফুল ইসলাম বাবু, মানিক বাহার, জাহিদুল হক লিটন, সুজাউদ্দৌলা লিটন, রাশেদুর রহমান রিমন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাট্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গাইবান্ধার দশটি নাট্য সংগঠন থেকে চল্লিশজন নাট্যকর্মী অংশগ্রহণ করে। কর্মশালাটি পরিচালনা করেন ভারতের ত্রিপুরার ম অভিনেতা, পরিচালক, নাট্য সংগঠক রঞ্জিত পুরকায়স্থ, নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা, সংগঠক অভিজিৎ দাস এবং বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক অভিক কুমার দে।