গ্রিসের গাভডোস উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নৌকাডুবির পর ৩৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গ্রিসের কোস্টগার্ডের দেওয়া তথ্য মতে, ক্রিটের দক্ষিণে অবস্থিত গ্রীক দ্বীপ গাভডোস উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে যাওয়ার পরে পাঁচজন মারা গেছেন। এই ঘটনায় আরও ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ৩৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতের পরপরই নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর গাভডোসের দক্ষিণে জাহাজ ও বিমানের সমন্বয়ে বড় উদ্ধার অভিযান চালানো হয় বলেও কোস্টগার্ড জানিয়েছে।
শনিবার পৃথক ঘটনায় মাল্টার পতাকাবাহী পণ্যবাহী জাহাজ গাভডোস থেকে প্রায় ৪০ নটিক্যাল মাইল (৭৪ কিমি) দূরে যাত্রা করা একটি নৌকা থেকে ৪৭ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে এই দ্বীপ থেকে প্রায় ২৮ নটিক্যাল মাইল (৫২ কিমি) দূরে অন্য আরও ৮৮ জনকে উদ্ধার করেছে একটি ট্যাংকার।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে এসব নৌকা একসঙ্গে ছেড়েছিল বলে কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা মনে করছেন।
এর আগে গত নভেম্বরের শেষের দিকে তুরস্কের উপকূল থেকে অভিবাসীদের নিয়ে গ্রিসে পাড়ি দেওয়ার সময় দুইটি নৌকা ডুবে অভিবাসী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এতে সেসময় উদ্বেগ জানিয়েছিল জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
গত ৩০ নভেম্বর দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউএনএইচসিআর জানায়, নভেম্বরে নৌকা ডুবে মোট ১৭ জন মারা গেছেন। সব মিলিয়ে চলতি বছরে এই রুটে ৪৫ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তত ৫৬ হাজার অভিবাসী গ্রিসে পৌঁছেছেন। তাদের বেশিরভাগই দেশটিতে গেছেন সমুদ্র পাড়ি দিয়ে। এই সংখ্যাটি গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গ্রিক সরকার ধারণা করেছিল, চলতি বছর হয়তো সব মিলিয়ে ৫০ হাজার অভিবাসী দেশটিতে আসতে পারেন। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আরও মাসখানেক বাকি থাকলেও অভিবাসীর সংখ্যা তাদের অনুমান ছাড়িয়ে গেছে।
মূলত এই বছর অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতকে দায়ী করেছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ। লিবিয়া থেকে গ্রিসের দক্ষিণের দ্বীপ ক্রিট পর্যন্ত দীর্ঘ এবং বিপজ্জনক ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টারত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। অনেক অভিবাসী তুরস্ক থেকে পূর্ব এজিয়ান দ্বীপগুলোতে পৌঁছাতে মানবপাচারকারীদের অর্থও দিয়ে থাকেন।
২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত তুরস্ক এবং গ্রিসের মধ্যকার পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুটে শিশুসহ অন্তত আড়াই হাজারেরও বেশি অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগই সংঘাত ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে ইউরোপে আসতে চেয়েছিলেন ভাগ্য বদলের আশায়।