চুয়াডাঙ্গা ০২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিটস্ট্রোক হলে করনীয়

শণিবার চুয়াডাঙ্গার  বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৪২ দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড করা হয়েছে। এই প্রচণ্ড দাবদাহ নিয়ে শঙ্কিত আবহাওয়াবিদরাও। আর এই গরমে হিটস্ট্রোক বা তাপদাহে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।

 

এই দাবদাহে হতে পারে হিটস্ট্রোক। যা ডেকে আনতে পারে অনেক বড় বিপদ। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে জীবননাশের ঝুঁকিও থাকে।

 

হিটস্ট্রোক হলে রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। অজ্ঞান হওয়ার আগে মাথা দপদপ, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা অনুভব করা, পেশির দুর্বলতা কিংবা পেশির ব্যথার মতো কিছু উপসর্গও দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ অনুভব করেন, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাচ্ছে। খিঁচুনি, ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস, বমিভাব কিংবা বমিও হতে পারে। রোগী অসংলগ্ন আচরণও করতে পারেন।

 

প্রচণ্ড গরমে যখন শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্কের সংবেদনশীল অংশ তার কার্যক্ষমতা হারায়, দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায় তখন হঠাৎ করে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।

 

মাত্রাতিরিক্ত গরমে এই তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা হঠাৎ বিকল হয়ে যেতে পারে। আপনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। শরীরের অতিরিক্ত পানিশূন্যতা বা তীব্র গরমের কারণে আপনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে কী করবেন?

 

তাপদাহের  লক্ষণ: 

 

প্রচণ্ড মাথাব্যাথা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, প্রচণ্ড গরমেও শরীরের ঘাম উৎপাদন কমে যাওয়া (মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা বিকল হয়ে গেলে) লাল, গরম , শুষ্ক চামড়া, মাংশপেশি ব্যথা, টানটান অনুভূতি, মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব, বমি দ্রুত হৃদস্পন্দন,
ঘন ঘন দুর্বল শ্বাস নেয়া, হঠাৎ আচরণগত ত্রুটি, কনফিউশান, কাওকে চিনতে না পার, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

হিটস্ট্রোক হলে করণীয়

 

আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠাণ্ডা স্থানে নিয়ে যাওয়া, জামাকাপড় খুলে ফেলা, শরীরে ঠাণ্ডা বরফ দেয়া (আইস প্যাক না পাওয়া গেলে ঠাণ্ডা পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে শরীর স্পন্জ করে দেয়া), শরীর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পুরো ভিজিয়ে দেয়া এবং রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো

হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয় 

 

প্রচুর পানি খান যেহেতু পানিশূন্যতা থেকেই হিট স্ট্রোক বা তাপদাহ হয়। খাবার পানির পাশাপাশি কাঁচা আমের ঘরে তৈরি জুস, লেবু, বেল, তরমুজের শরবত খেতে যেমন ভালো লাগবে, তেমনি তা আপনার দেহের পানিশূন্যতা পূরণ করে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনবে।

পোশাক পরেন ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের। গরমে আঁটসাঁট পোশাক থেকে শরীরকে রেহাই দিন। তীব্র গরমে হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতি কাপড়ের পোশাক বেছে নিন।

জাঙ্ক ফুড একেবারেই নয়। গরমের এই দুই মাস ফাস্টফুডকে না বলুন। কেননা এতে থাকা অতিরিক্ত লবণ, তেল গরমে আপনার শরীরকে আরও বেশি ক্ষতিকর অবস্থার দিকে নিয়ে যায়। শরীর ঠাণ্ডা থাকে এমন ঘরে তৈরি খাবার খান।

 

গোসল করুন যতবার সম্ভব প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপমাত্রা যাতে সীমা অতিক্রম না করে, এজন্য যতবার সম্ভব গোসল করুন। তবে প্রতিবার গোসলের পরে চুল ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। নইলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।

দুপুর ১টা থেকে ২টায় থাকুন ছায়ায়, দুপুর ১২টা থেকে ২টায় রোদের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি থাকে।

ব্যাগে রাখুন ছাতা, টুপি, পানি, সানগ্লাসব্যাগে এই গরমে কয়েকটা জিনিস রাখতেই হবে। ছাতা, টুপি, সানগ্লাস, পানি ছাড়াও রাখতে পারেন একটা পানি স্প্রে করার বোতল ও রুমাল।

 

চা কফি কোল্ড ড্রিঙ্কস নয় চা, কফি কোল্ড ড্রিঙ্কস গরমে নিস্তেজ শরীরকে কিছুক্ষণের জন্য সতেজ করলেও, এগুলোর কারণে শরীর থেকে পানি আরও দ্রুত বেরিয়ে গিয়ে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে।

 

খাদ্যতালিকার রাখুন সবজি ও ফল দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে ভুনা খিচুড়ি, বিরিয়ানি জাতীয় খাবারগুলোকে কিছুদিনের জন্য বিদায় দিন। এর বদলে ভাত, কম তেল মসলায় রান্না মাছ, প্রচুর পরিমাণে সবজি খেতে পারেন। কম তেলে রান্না খাবার আপনাকে এই গরমে সতেজ রাখবে।

 

কনটেন্ট ক্রেডিট: মেডিভয়েস

Powered by WooCommerce

হিটস্ট্রোক হলে করনীয়

আপডেটঃ ০১:১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

শণিবার চুয়াডাঙ্গার  বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৪২ দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড করা হয়েছে। এই প্রচণ্ড দাবদাহ নিয়ে শঙ্কিত আবহাওয়াবিদরাও। আর এই গরমে হিটস্ট্রোক বা তাপদাহে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে।

 

এই দাবদাহে হতে পারে হিটস্ট্রোক। যা ডেকে আনতে পারে অনেক বড় বিপদ। দ্রুত চিকিৎসা না নিলে জীবননাশের ঝুঁকিও থাকে।

 

হিটস্ট্রোক হলে রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। অজ্ঞান হওয়ার আগে মাথা দপদপ, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা অনুভব করা, পেশির দুর্বলতা কিংবা পেশির ব্যথার মতো কিছু উপসর্গও দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ অনুভব করেন, হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যাচ্ছে। খিঁচুনি, ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস, বমিভাব কিংবা বমিও হতে পারে। রোগী অসংলগ্ন আচরণও করতে পারেন।

 

প্রচণ্ড গরমে যখন শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্কের সংবেদনশীল অংশ তার কার্যক্ষমতা হারায়, দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায় তখন হঠাৎ করে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।

 

মাত্রাতিরিক্ত গরমে এই তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা হঠাৎ বিকল হয়ে যেতে পারে। আপনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। শরীরের অতিরিক্ত পানিশূন্যতা বা তীব্র গরমের কারণে আপনি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে কী করবেন?

 

তাপদাহের  লক্ষণ: 

 

প্রচণ্ড মাথাব্যাথা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, প্রচণ্ড গরমেও শরীরের ঘাম উৎপাদন কমে যাওয়া (মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসের তাপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা বিকল হয়ে গেলে) লাল, গরম , শুষ্ক চামড়া, মাংশপেশি ব্যথা, টানটান অনুভূতি, মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব, বমি দ্রুত হৃদস্পন্দন,
ঘন ঘন দুর্বল শ্বাস নেয়া, হঠাৎ আচরণগত ত্রুটি, কনফিউশান, কাওকে চিনতে না পার, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

হিটস্ট্রোক হলে করণীয়

 

আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠাণ্ডা স্থানে নিয়ে যাওয়া, জামাকাপড় খুলে ফেলা, শরীরে ঠাণ্ডা বরফ দেয়া (আইস প্যাক না পাওয়া গেলে ঠাণ্ডা পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে শরীর স্পন্জ করে দেয়া), শরীর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পুরো ভিজিয়ে দেয়া এবং রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো

হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয় 

 

প্রচুর পানি খান যেহেতু পানিশূন্যতা থেকেই হিট স্ট্রোক বা তাপদাহ হয়। খাবার পানির পাশাপাশি কাঁচা আমের ঘরে তৈরি জুস, লেবু, বেল, তরমুজের শরবত খেতে যেমন ভালো লাগবে, তেমনি তা আপনার দেহের পানিশূন্যতা পূরণ করে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনবে।

পোশাক পরেন ঢিলেঢালা ও হালকা রঙের। গরমে আঁটসাঁট পোশাক থেকে শরীরকে রেহাই দিন। তীব্র গরমে হালকা রঙের, ঢিলেঢালা সুতি কাপড়ের পোশাক বেছে নিন।

জাঙ্ক ফুড একেবারেই নয়। গরমের এই দুই মাস ফাস্টফুডকে না বলুন। কেননা এতে থাকা অতিরিক্ত লবণ, তেল গরমে আপনার শরীরকে আরও বেশি ক্ষতিকর অবস্থার দিকে নিয়ে যায়। শরীর ঠাণ্ডা থাকে এমন ঘরে তৈরি খাবার খান।

 

গোসল করুন যতবার সম্ভব প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপমাত্রা যাতে সীমা অতিক্রম না করে, এজন্য যতবার সম্ভব গোসল করুন। তবে প্রতিবার গোসলের পরে চুল ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। নইলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।

দুপুর ১টা থেকে ২টায় থাকুন ছায়ায়, দুপুর ১২টা থেকে ২টায় রোদের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি থাকে।

ব্যাগে রাখুন ছাতা, টুপি, পানি, সানগ্লাসব্যাগে এই গরমে কয়েকটা জিনিস রাখতেই হবে। ছাতা, টুপি, সানগ্লাস, পানি ছাড়াও রাখতে পারেন একটা পানি স্প্রে করার বোতল ও রুমাল।

 

চা কফি কোল্ড ড্রিঙ্কস নয় চা, কফি কোল্ড ড্রিঙ্কস গরমে নিস্তেজ শরীরকে কিছুক্ষণের জন্য সতেজ করলেও, এগুলোর কারণে শরীর থেকে পানি আরও দ্রুত বেরিয়ে গিয়ে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে।

 

খাদ্যতালিকার রাখুন সবজি ও ফল দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা থেকে ভুনা খিচুড়ি, বিরিয়ানি জাতীয় খাবারগুলোকে কিছুদিনের জন্য বিদায় দিন। এর বদলে ভাত, কম তেল মসলায় রান্না মাছ, প্রচুর পরিমাণে সবজি খেতে পারেন। কম তেলে রান্না খাবার আপনাকে এই গরমে সতেজ রাখবে।

 

কনটেন্ট ক্রেডিট: মেডিভয়েস