চুয়াডাঙ্গা ০৭:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল

চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের তেতো স্বাদ পেল ইউনাইটেড আর লিভারপুল কাটালো মৌসুমে নিজেদের সেরা দিন।

 

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে সামনে পেয়ে লিভারপুল যেন হয়ে উঠল উজ্জীবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওঠা দল। যাদের আটকানোর কোনো পথই খুঁজে পেল না ইউনাইটেড। দ্বিতীয়ার্ধে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে প্রতিপক্ষের জালে গোল উৎসবে মেতে উঠল ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা।

অ্যানফিল্ডে রোববার প্রি  মিয়ার লিগে ম্যাচে ৭-০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। বিরতির আগে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৬ গোল করেছে তারা।

কোডি হাকপো, দারউইন নুনেস ও মোহামেদ সালাহ করেন দুটি করে গোল। আর শেষ দিকে বদলি নেমে জালের দেখা পান রবের্তো ফিরমিনো।

 

মৌসুমের শুরু থেকে বারবার ছন্দ হারানো লিভারপুল ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই ধুঁকছিল। লিগে টানা চার ম্যাচে জয়শূন্য (তিন হার ও এক ড্র) থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে তারা নেমে গিয়েছিল পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে।

এরপরই দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। আসরে প্রথমবারের মতো টানা পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত (চার জয় ও এক ড্র) রয়েছে তারা। যার প্রভাব পড়েছে লিগ টেবিলেও; উঠে এসেছে পাঁচ নম্বরে, শীর্ষ চারের সম্ভাবনাও এখন অমূলক নয়।

“ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল”
বল দখলে লিভারপুল শুরু থেকে আধিপত্য করলেও আক্রমণে ভীতি ছড়াতে থাকে ইউনাইটেড। আন্তোনি, মার্কাস র‌্যাশফোর্ড, ব্রুনো ফের্নান্দেসরা ভালো কয়েকটি সুযোগও তৈরি করেন; তবে কেউই তা কাজে লাগাতে পারেনি।

 

৪২তম মিনিটে কাসেমিরো হেডে একবার বল জালেও পাঠান। কিন্তু পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন তিনি। পরের মিনিটেই দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায় লিভারপুল।

নিজেদের সীমানা থেকে ইংলিশ ডিফেন্ডার অ্যান্ড্রু রবার্টসন থ্রু পাস বাড়ান হাকপোর উদ্দেশ্যে। প্রতপক্ষের দুর্বল রক্ষণের সুযোগে একরকম বিনা বাধায় বল ধরে বক্সে একজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে নেন কাতার বিশ্বকাপে নজর কাড়া এই ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে আরও দুবার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় লিভারপুল। দ্বিতীয় গোলে আবারও স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইউনাইটেডের ভঙ্গুর রক্ষণ।

 

“ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল”

৪৭তম মিনিটের গোলে নিজেদের বক্সের বাইরে কয়েক দফায় বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেও পারেনি ইউনাইটেড। শেষে তরুণ মিডফিল্ডার হার্ভি এলিয়টের ছোট করে বাড়ানে ক্রসে হেডে গোলটি করেন নুনেস।

তিন মিনিট পর প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ রুখে পাল্টা আক্রমণে ওঠে লিভারপুল। ডান দিক বল পায়ে এগিয়ে সালাহ বক্সের বাইরে লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে কাটিয়ে খুঁজে নেন হাকপোকে। আর দুরূহ কোণ থেকে চিপ শটে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে জালে বল পাঠান তিনি।

জানুয়ারিতে পিএসভি ছেড়ে লিভারপুলে যোগ দেওয়া ডাচ উইঙ্গার হাকপোর প্রিমিয়ার লিগে গোল হলো চারটি।

লিভারপুলের হয়ে চলতি মৌসুমে এই নিয়ে সরাসরি ৩০টি গোলে অবদান রাখলেন সালাহ (২০ গোল ও ১০ অ্যাসিস্ট)। ২০২২-২৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গোল করা ও করানোয় দুই অঙ্ক স্পর্শ করলেন মিশরের এই ফরোয়ার্ড।

<

পরের কয়েক মিনিটে একের পর এক আক্রমণে ইউনাইটেডের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে লিভারপুল। আসতে থাকে সুযোগও। তারই ধারাবাহিকতায় ৬৬তম মিনিটে প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে আসা বল বক্সে পেয়ে জোরাল উঁচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন সালাহ।

৭৫তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান নুনেস। বাঁ দিক থেকে জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রসে হেডে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চম গোলটি করেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড নুনেস। ৮৩তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন সালাহ।

এবারের প্রিমিয়ার লিগে সালাহর গোল হলো ১১টি। মৌসুমে সব মিলিয়ে হলো ২২টি।

রেকর্ড বইয়ের নতুন একটি পাতায়ও নাম লিখিয়েছেন তিনি। লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোল এখন তার; ২০৫ ম্যাচে ১২৯ গোল। ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড রবি ফাওলারকে (১২৮ গোল)।

হাকপোর বদলি নামা ফিরমিনো স্কোরলাইনে নাম লেখান ৮৮তম মিনিটে। সালাহ থ্রু বল ধরে কোনাকুনি শটে ইউনাইটেডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ক্লাবের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় ব্যবধানে আর হারেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সবশেষ ১৯৩১ সালে উলভসের বিপক্ষে ৭-০ গোলেই হেরেছিল তারা।

ইউনাইটেডের বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই লিভারপুলের এটা সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। আগের বড় ব্যবধানটি ছিল ৭-১ গোলের, ১৮৯৫ সালে তারা ওই তেতো স্বাদ দিয়েছিল ইউনাইটেডকে।

২৫ ম্যাচে ১২ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠেছে লিভারপুল। লিএক ধাপ নিচে নেমে যাওয়া নিউক্যাসল ইউনাইটেডের পয়েন্ট ৪১, তারা ম্যাচ খেলেছে একটি কম।

লিভারপুলের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চার নম্বরে টটেনহ্যাম হটস্পার, অবশ্য একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে তারা।

২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি।

তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।

প্রসংঙ্গ :

Powered by WooCommerce

ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল

আপডেটঃ ০৮:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের তেতো স্বাদ পেল ইউনাইটেড আর লিভারপুল কাটালো মৌসুমে নিজেদের সেরা দিন।

 

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে সামনে পেয়ে লিভারপুল যেন হয়ে উঠল উজ্জীবনী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ওঠা দল। যাদের আটকানোর কোনো পথই খুঁজে পেল না ইউনাইটেড। দ্বিতীয়ার্ধে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে প্রতিপক্ষের জালে গোল উৎসবে মেতে উঠল ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা।

অ্যানফিল্ডে রোববার প্রি  মিয়ার লিগে ম্যাচে ৭-০ গোলে জিতেছে লিভারপুল। বিরতির আগে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৬ গোল করেছে তারা।

কোডি হাকপো, দারউইন নুনেস ও মোহামেদ সালাহ করেন দুটি করে গোল। আর শেষ দিকে বদলি নেমে জালের দেখা পান রবের্তো ফিরমিনো।

 

মৌসুমের শুরু থেকে বারবার ছন্দ হারানো লিভারপুল ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই ধুঁকছিল। লিগে টানা চার ম্যাচে জয়শূন্য (তিন হার ও এক ড্র) থেকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে তারা নেমে গিয়েছিল পয়েন্ট তালিকার ৯ নম্বরে।

এরপরই দলটির ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। আসরে প্রথমবারের মতো টানা পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত (চার জয় ও এক ড্র) রয়েছে তারা। যার প্রভাব পড়েছে লিগ টেবিলেও; উঠে এসেছে পাঁচ নম্বরে, শীর্ষ চারের সম্ভাবনাও এখন অমূলক নয়।

“ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল”
বল দখলে লিভারপুল শুরু থেকে আধিপত্য করলেও আক্রমণে ভীতি ছড়াতে থাকে ইউনাইটেড। আন্তোনি, মার্কাস র‌্যাশফোর্ড, ব্রুনো ফের্নান্দেসরা ভালো কয়েকটি সুযোগও তৈরি করেন; তবে কেউই তা কাজে লাগাতে পারেনি।

 

৪২তম মিনিটে কাসেমিরো হেডে একবার বল জালেও পাঠান। কিন্তু পরিষ্কার অফসাইডে ছিলেন তিনি। পরের মিনিটেই দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যায় লিভারপুল।

নিজেদের সীমানা থেকে ইংলিশ ডিফেন্ডার অ্যান্ড্রু রবার্টসন থ্রু পাস বাড়ান হাকপোর উদ্দেশ্যে। প্রতপক্ষের দুর্বল রক্ষণের সুযোগে একরকম বিনা বাধায় বল ধরে বক্সে একজনকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে নেন কাতার বিশ্বকাপে নজর কাড়া এই ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে আরও দুবার জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় লিভারপুল। দ্বিতীয় গোলে আবারও স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইউনাইটেডের ভঙ্গুর রক্ষণ।

 

“ইউনাইটেডের জালে লিভারপুলের ৭ গোল”

৪৭তম মিনিটের গোলে নিজেদের বক্সের বাইরে কয়েক দফায় বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেও পারেনি ইউনাইটেড। শেষে তরুণ মিডফিল্ডার হার্ভি এলিয়টের ছোট করে বাড়ানে ক্রসে হেডে গোলটি করেন নুনেস।

তিন মিনিট পর প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ রুখে পাল্টা আক্রমণে ওঠে লিভারপুল। ডান দিক বল পায়ে এগিয়ে সালাহ বক্সের বাইরে লিসান্দ্রো মার্তিনেসকে কাটিয়ে খুঁজে নেন হাকপোকে। আর দুরূহ কোণ থেকে চিপ শটে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে জালে বল পাঠান তিনি।

জানুয়ারিতে পিএসভি ছেড়ে লিভারপুলে যোগ দেওয়া ডাচ উইঙ্গার হাকপোর প্রিমিয়ার লিগে গোল হলো চারটি।

লিভারপুলের হয়ে চলতি মৌসুমে এই নিয়ে সরাসরি ৩০টি গোলে অবদান রাখলেন সালাহ (২০ গোল ও ১০ অ্যাসিস্ট)। ২০২২-২৩ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে গোল করা ও করানোয় দুই অঙ্ক স্পর্শ করলেন মিশরের এই ফরোয়ার্ড।

<

পরের কয়েক মিনিটে একের পর এক আক্রমণে ইউনাইটেডের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে লিভারপুল। আসতে থাকে সুযোগও। তারই ধারাবাহিকতায় ৬৬তম মিনিটে প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে আসা বল বক্সে পেয়ে জোরাল উঁচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন সালাহ।

৭৫তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান নুনেস। বাঁ দিক থেকে জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রসে হেডে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চম গোলটি করেন উরুগুয়ের ফরোয়ার্ড নুনেস। ৮৩তম মিনিটে ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন সালাহ।

এবারের প্রিমিয়ার লিগে সালাহর গোল হলো ১১টি। মৌসুমে সব মিলিয়ে হলো ২২টি।

রেকর্ড বইয়ের নতুন একটি পাতায়ও নাম লিখিয়েছেন তিনি। লিভারপুলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোল এখন তার; ২০৫ ম্যাচে ১২৯ গোল। ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড রবি ফাওলারকে (১২৮ গোল)।

হাকপোর বদলি নামা ফিরমিনো স্কোরলাইনে নাম লেখান ৮৮তম মিনিটে। সালাহ থ্রু বল ধরে কোনাকুনি শটে ইউনাইটেডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

ক্লাবের ইতিহাসে এর চেয়ে বড় ব্যবধানে আর হারেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সবশেষ ১৯৩১ সালে উলভসের বিপক্ষে ৭-০ গোলেই হেরেছিল তারা।

ইউনাইটেডের বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই লিভারপুলের এটা সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। আগের বড় ব্যবধানটি ছিল ৭-১ গোলের, ১৮৯৫ সালে তারা ওই তেতো স্বাদ দিয়েছিল ইউনাইটেডকে।

২৫ ম্যাচে ১২ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠেছে লিভারপুল। লিএক ধাপ নিচে নেমে যাওয়া নিউক্যাসল ইউনাইটেডের পয়েন্ট ৪১, তারা ম্যাচ খেলেছে একটি কম।

লিভারপুলের চেয়ে ৩ পয়েন্ট বেশি নিয়ে চার নম্বরে টটেনহ্যাম হটস্পার, অবশ্য একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে তারা।

২৬ ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটি।

তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।