কলার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যা আমরা বেশিরভাগই জানি। কিন্তু আপনি কি জানেন কলার অনেক সৌন্দর্য উপকারিতাও রয়েছে? কলাতে উচ্চ পটাসিয়াম থাকে যা চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী খনিজ। ফলটিতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি এবং অন্যান্য খনিজ যেমন আয়রন,ম্যাঙ্গানিজ এবং প্রোটিন রয়েছে। বহুল খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ হওয়ায় সৌন্দর্য চর্চায় এর ভূমিকাও ব্যাপক। ফলটি ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিস্ময়কর ভাবে কার্যকর। চুলের বৃদ্ধির জন্য কলাকে একটি অত্যাবশ্যক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আপনার প্রাত্যহিক চুলের যত্নে কলার তৈরি মাস্ক কিভাবে উপকারী হতে পারে তা আলোচনা করা হল।
১.খুশকি কমাতেঃ বিশেষ করে শীতের মাসগুলিতে খুশকি চুলের একটি সাধারণ সমস্যা। মাথার ত্বকের ঠিকমতো যত্ন না নেবার ফলে ত্বকের ফলিকলের শুষ্কতা বেড়ে গিয়ে ব্যাপক চুলকানি ভাব তৈরি হতে পারে এবং খুশকি বেড়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় মাথার স্কাল্পে কলার তৈরি পেস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। যা ত্বকের আদ্রতা কমাতে সাহায্য করবে এবং খুশকির বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করবে। ২ চা চামচ লেবুর রস এবং কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েলের সংমিশ্রণে কলার পেস্ট তৈরি করে গোসলের আগে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রেখে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত করলে খুশকির উপদ্রব অনেকটাই কমিয়ে যেতে পারে।
২. চুলের গঠন উন্নত করতেঃ কলার সিলিকা উপাদান ভেতর থেকে চুলের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে। ফলের মধ্যে উপস্থিত প্রাকৃতিক তেল শুধুমাত্র চুলের খাদই রক্ষা করে না বরং চুলের গঠনও উন্নত করে। আপনার চুলে নিয়মিত কলা ব্যবহার করার ফলে চুলের মসৃণ ভাব উপলব্ধি করতে পারবেন। একটি পাকা কলা এবং অলিভ অয়েলের সাথে একটি ডিম ব্যবহার করে প্রস্তুতকৃত হেয়ার মাস্ক নিয়মিত চুলে লাগানো যেতে পারে। যা প্রাকৃতিক চকচকে ভাব আনায়নে যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে।
৩. চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেঃ শীত, ধুলাবালি, দূষণ এবং ঘন ঘন গরম করার সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে চুল শুকিয়ে যায় এবং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কলায় রয়েছে প্রাকৃতিক তেল যা চুলকে গভীর কন্ডিশনার প্রদান করে এবং চুলের স্ট্র্যান্ডগুলিকে চকচকে এবং প্রানবন্ত করে তোলে। আপনি একটি পাকা কলা, ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ ওটমিল ব্যবহার করে একটি হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।
৪. চুলের কোঁকড়ানো ভাব নিয়ন্ত্রণেঃ বিশেষ করে শীতের মৌসুমে আবহাওয়ার রুক্ষতার কারণে চুল শুকিয়ে যায়। এর ফলে ঝাঁকুনি তৈরি হয়, বিশেষ করে যাদের স্বাভাবিকভাবে ঢেউ খেলানো বা কোঁকড়া চুল আছে তাদের জন্য। কলায় রয়েছে প্রাকৃতিক তেল যা চুলের স্ট্রেন্ডে হাইড্রেশন প্রদান করে এবং অনেকাংশে কুঁচকে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
৫.চুলের বৃদ্ধিতেঃ একটি পরিষ্কার মাথার ত্বক ফলিকলের স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আপনার চুলের জন্য কলার মাস্ক ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় তৈলাক্ততা এবং পুষ্টি যোগাবে যা চুল ভেঙে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং চুলের বৃদ্ধিকে ্ত্বরানিত করবে। একটি পাকা কলা এবং এক কাপ পাকা পেঁপে ব্যবহার করে একটি হেয়ার মাস্ক তৈরি করুন। পেস্টটি প্রয়োগ করুন এবং একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৬. চুলের প্রান্তিক ফাটল রোধেঃ বিভক্ত প্রান্ত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন সুনির্দিষ্ট উপায় নেই তাদের কেটে ফেলা ছাড়া। কলার পেস্ট ব্যবহারের ফলে চুলের প্রান্তিক ফাটল কমানো যেতে পারে। এমনকি বিভাজনের পরিস্থিতি একেবারে দূর করা সম্ভব। কলা সবসময় আপনার চুলের হাইড্রেট এবং পুষ্ট ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। ম্যাশ করা অ্যাভোকাডো দিয়ে তৈরি কলার মাস্কের নিয়মতি ব্যবহার- বিভক্ত প্রান্তকে বিদায় জানাতে সত্যিই অসাধারণ।
৭. চুলের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতেঃ চুলের স্থিতিস্থাপকতা চুলের শক্তিও নির্ধারণ করে। কলায় থাকা ভিটামিন বি চুলের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কলা এবং আরগান তেল দিয়ে একটি সাধারণ হেয়ার মাস্ক চুলের স্থিতিস্থাপকতাকে অনেকাংশে উন্নত করতে পারে।